স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি ১৮ বাংলাদেশি ফিরলেন দেশে

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

মানবপাচারের শিকার হয়ে মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বন্দিজীবন কাটানো ১৮ বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেছেন তারা। বিমানবন্দরে তাদের জরুরি সহায়তা দেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মীরা। ভালো চাকরি ও বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচারকারীরা দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এই বাংলাদেশিদের প্রথমে থাইল্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদেরকে নেওয়া হয় মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে। সেখানে পাচারকারীরা তাদের দিয়ে জোরপূর্বক সাইবার অপরাধমূলক কাজ করাতো। কেউ রাজি না হলে করা হতো বৈদ্যুতিক শক দেওয়াসহ ভয়াবহ সব নির্যাতন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ১. ওমর ফারুক, ২. রাশেদুল ইসলাম, ৩. মো. আলিফ, ৪. রায়হান সোবহান, ৫. শেখ আরমান, ৬. মো. পাভেল চৌধুরী, ৭. মনির হোসেন, ৮. মো. ইসমাইল হোসেন, ৯. মো. নিজাম উদ্দীন, ১০. জহির উদ্দিন, ১১. তানভীর আকন্দ রাফি, ১২. তোয়ানুর খলিলুল্লাহ, ১৩. মো. সায়মন হোসেন, ১৪. মো. উজ্জ্বল হোসেন, ১৫. মেহেদী হাসান, ১৬. মো. কায়সার হোসেন, ১৭. মো. শাহ আলম ও ১৮. মো. আকাশ আলী।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান (মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদেরকে উদ্ধারের জন্যে ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর আমরা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সিআইডি ও থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সবার নিরলস প্রচেষ্টায় দুঃসহ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৮ বাংলাদেশি।
উদ্ধার বাংলাদেশিদের একজন চট্টগ্রামের মো. আলিফ বলেন, দুবাইতে আমি জাহাজে কাজ করতাম। আমাকে বেশি বেতনে ডাটা এন্ট্রির কাজের লোভ দেখিয়ে থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মানবপাচারকারীরা থাই-মিয়ানমার সীমান্তের ম্যাসটে নিয়ে যায়। যেখানে আমার মতো বিভিন্ন দেশের আরও অনেক মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিক্রি করে দেওয়া হয় স্ক্যাম সেন্টারে। আমি ছয় মাস ভয়াবহ নির্যাতনের মধ্যে সেখানে বন্দি ছিলাম। জীবন বাঁচাতে আমি স্ক্যাম সেন্টারে কাজ করতে বাধ্য হই।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাচারকারী চক্রের মূল হোতা ইফতেখারুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা গত ১৮ জানুয়ারি তাকে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে আটক করেছি। পাশাপাশি পাচারকারী চক্রের আরেক হোতা আব্দুল্লাহ আল নোমানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মানবপাচারের শিকারদের উদ্ধারে ব্র্যাকের প্রত্যাবাসনমূলক কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, মানব পাচারের শিকারদের উদ্ধারের পুরো প্রক্রিয়াতেই ব্র্যাক আমাদের সঙ্গে একসাথে কাজ করছে।