ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
কাল শুক্রবার, ১০মাঘ এশিয়া উপমহাদেশের প্রখ্যাত অলীয়ে কামেল আধ্যাত্মিক সাধক, মাইজভান্ডার দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ (ক.) মাইজভান্ডারির ১১৯তম বার্ষিক ওরশের প্রধান দিবস। শত বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এই মহান অলির ওফাত (তিরোধান) দিবস ২৪ জানুয়ারি রাতে ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরীফে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হবে।
ওরশ উপলক্ষে আলোকসজ্জা করা হয়েছে হযরত আহমদ উল্লাহ (ক.) রওজাসহ অন্যান্য রওজা এবং মঞ্জিলগুলোয়। স্ব স্ব মঞ্জিলের উদ্যোগে দশ দিন ব্যাপি কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
১০ মাঘে বংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বার্মা, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বহু দেশ হতে আগত লক্ষ লক্ষ ভক্ত-অনুরক্ত আশেকের সমাগমে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার খতমে কোরআন, খতমে গাউছিয়া, নাতে মোস্তফা পরিবেশন, শানে গাউছিয়া পরিবেশন, মিলাদ মাহফিল, জিকির, ছেমা মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় । আজ বৃহস্পতিবার গাউছুল আজম মাইজভান্ডারি (ক.) এর রওজা শরীফে গোসল শরীফ ও গিলাফ চড়ানোর ব্যবস্থা করাসহ বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
কাল শুক্রবার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজাদ্দানশীন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারি (ম.)। তাছাড়া আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করবেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলে মোন্তাজেম, সাজাদ্দানশীন সৈয়দ ডা. দিদারুল হক মাইজভান্ডারি (ম.)। দরবারের দায়িত্বশীল এনামুল হক চৌধুরী সেলিম জানিযেছেন, উপস্থিত থাকবেন তারই পুত্র, নায়েবে সাজ্জাদানশীন সৈয়দ হোসেইন রাইফ নুরুল ইসলাম রুবাব মাইজভান্ডারি (ম.)। এছাড়া সৈয়দ মনিরুল হক মাইজভান্ডারির পক্ষে পুত্রগণ সৈয়দ আহমদ হোসাইন শাহরিয়ার মাইজভান্ডারি (ম.), সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন সোহেল মাইজভান্ডারি (ম.) আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভান্ডারি মহাসচিব নাজমুল হাসান মাহমুদ শিমুল ।
মুনাজাত পরিচালনা করবেন গাউছিয়া হক মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ মো. হাসান মাইজভান্ডারি (ম.), গাউছিয়া রহমান মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন ছৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারি (ম.), গাউছিয়া মঈনিয়া মঞ্জিলের সাজাদ্দাশীন সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারি (ম.), গাউছিয়া আমিন মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ সামশুল আরেফীন মাইজভান্ডারি (বাবুল মিয়া), গাউছিয়া গায়েবিধন মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ আবুল মুনসুর মাইজভান্ডারি (ম.), নায়েবে সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ইরফানুর রহমান (মিজান) মাইজভান্ডারি (ম.), গাউছিয়া সামস মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ গোলাম মরতুজা মাইজভান্ডারি (ম.), নায়েবে সাজাদানশীন সৈয়দ আবু ছালেহ জঙ্গি মাইজভান্ডারি (ম.)।
গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েবে সাজ্জাদানশীন সৈয়দ হোসেইন রাইফ নুরুল ইসলাম রুবাব মাইজভান্ডারি জানান, গাউছুল আজম মাইজভান্ডারির ওরশে আগত দেশ বিদেশের আশেক-ভক্ত, জায়েরীনদের জন্য থাকা-খাওয়া, স্যানিটেশন, প্রাথমিক চিকিৎসা, পার্কিং, নিরাপত্তা, নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য লাইটিং এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী খাদেমান ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ইতোমধ্যেই নেয়া হয়েছে।
ওরশের প্রশাসনিক সমন্বয় সভায় ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ওরশে আগত আশেক, ভক্ত, মুরিদান, জায়েরীনদের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার, স্ব স্ব মঞ্জিলের স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। ওরশ শরীফে ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা ও ভিডিও চিত্র ধারণের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে।