নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কে আর্থিকভাবে সচ্ছল করার পাশাপাশি নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রকৌশল বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগের নাগরিক সেবামূলক কাজের মান বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার টাইগারপাসস্থ কার্যালয়ে চসিকের প্রকৌশল বিভাগ ও রাজস্ব সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
সিটি মেয়র বলেন, নগরীর অবকাঠামোগত সক্ষমতার সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জড়িত। এজন্য প্রকৌশল কাজের মান বাড়াতে হবে। ঠিকাদাররা যেসব নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দেব না। যে সমস্ত সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলো সংস্কারের দ্রæত উদ্যোগ নিতে হবে।
চসিকের আয় বাড়ানোর প্রতি জোর দিয়ে মেয়র বলেন, প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো থেকে সার উৎপাদন করে আয় করা যায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংগৃহীত বর্জ্য থেকে পচনশীল জৈব পদার্থগুলো আলাদা করতে হবে। এরপর সেই সংগৃহীত জৈব পদার্থ থেকে সার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া যে সমস্ত মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়, সেগুলোকে প্রক্রিয়া করে প্লাস্টিকের দানায় রূপান্তর করে বিক্রি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া সিটি করপোরেশনের যে সমস্ত স্থাপনা থেকে আয় আসা সম্ভব সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্জ্যরে বিন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল যা করা প্রয়োজন করতে হবে।
বারইপাড়া খাল প্রকল্প দ্রæত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে বারইপাড়া খাল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। এ প্রকল্প শেষ না হওয়ায় জনগণ খুবই কষ্টে আছে। দ্রæত এ প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরীতে সড়ক আলোকায়ন বাড়াতে হবে। নগরবাসীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ সড়কে বাতি না থাকা। সড়কে আলোকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতি।এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের নির্দেশ দেন মেয়র।
গৃহকর খেলাপিদের তালিকা করার নির্দেশ : নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকর খেলাপিদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, প্রাথমিকভাবে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকর খেলাপিদের তালিকা ১ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিন। আমি রবিবার থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাব। এদের বকেয়া গৃহকর দিতে বলব। কেউ আর্থিক সঙ্কটে থাকলে আলাদা বিষয় তবে কেউ গায়ের জোরে কর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।
ডা. শাহাদাত বলেন, চসিকের যে সমস্ত মার্কেট আছে, হাট-বাজার-ঘাট আছে সেগুলো থেকেও রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোন মামলা থাকলে জানাবেন, সেগুলো নিস্পত্তি করতে উদ্যোগ নিব। হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর পরিবর্তে যারা কর দিচ্ছেন না তাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কর প্রদান আটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, চসিকের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের পিডি মো. আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমরসহ প্রকৌশল ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।