অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাদ দেওয়ার ’গুরুদন্ড’ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। খবর বিডিনিউজের
এতে বলা হয়, ঊর্মির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি অনুযায়ী তাকে বরখাস্ত করা হয়। লালমনিরহাটের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি ২০২৪ সালের ৫ অক্টোবর ওই পোস্ট দেওয়ার দুই দিন পর থেকে সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলার বিচারও চলছে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে। বুধবার তাকে বরখাস্ত করার আদেশে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ, কারণ দর্শানো নোটিস ও তার জবাব থেকে শুরু করে বিভাগীয় তদন্ত ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করার তথ্য তুলে ধরা হয়।
ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের মাথায় ৬ অক্টোবর ফেসবুকে এক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে পোস্ট দেন লালমনিরহাটে দায়িত্ব পালনরত সহকারী কমিশনার ঊর্মি।
তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।’
সমালোচনার মুখে ঊর্মিকে মাঠ প্রশাসন থেকে সরিয়ে এনে জনপ্রশাসনের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। দুই দিন পর ৭ অক্টোবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও শুরু হয়। মামলা চলাকালে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে মন্ত্রণালয়ে আসেননি। ফলে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে তার মামলাটি এতদিন চলছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে একই বিধিমালার বিধি ৪(৩) (ঘ) অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ সূচক গুরুদন্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসি) পরামর্শ নিয়ে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।