আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ধর্ষণের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে একাধিক ঘটনায় এক বছরের শিশু ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাও পাওয়া গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সশস্ত্র ব্যক্তিরা অন্তত ২২১টি শিশুকে ধর্ষণ করেছে, এমন প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ মেয়ে আর বাকিরা ছেলে শিশু। নৃশংসতার শিকার শিশুদের মধ্যে ১৬ জনের বয়স পাঁচের নিচে। আর তাদের চারজনের বয়স ছিল একেরও কম।
ইউনিসেফের কাছে শিশুদের বিরুদ্ধে আরও ৭৭টি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, যেগুলো মূলত ছিল ধর্ষণ প্রচেষ্টার অংশ। গাদারিফ, কাসালা, গেজিরা, খার্তুম, নীল নদ, উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ, দক্ষিণ কর্দোফান, উত্তর দারফুর ও পশ্চিম দারফুরে এসব নৃশংসতা ঘটেছে। সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ধারণা, সংখ্যাটি আরও অনেক বেশি হতে পারে। এই যুদ্ধে এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং দেশে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যৌন নির্যাতন ও জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার মতো অপরাধের সঙ্গে উভয় পাশই জড়িত রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৬১ হাজার ৮০০ শিশু অভ্যন্তরীণভাবে উচ্ছেদের শিকার হয়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মতো অপরাধ করা হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন। ইউনিসেফ মুখপাত্র টেস ইনগ্রাম মার্কিন বার্তাসংস্থা এপিকে বলেছেন, সামাজিক লোকলজ্জা ও যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থাতে আমরা যে কয়টা ঘটনা জানতে পেরেছি, তা অতি সামান্য। এরকম হাজারো শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ইউনিসেফ বলেছে, সামাজিক অজ্ঞতার কারণে যৌন নির্যাতনের শিকার মানুষটিই বরং সামনে আসতে পারে না। আর সশস্ত্র অপরাধীদের প্রতিশোধের শিকার হওয়ার ভয় তো রয়েছেই। অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার নারীকেই উল্টো তার পরিবার পরিত্যাগ করে।