লোহাগাড়া প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে সুখছড়ি খালের পাড়ের ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি গ্রামীণ সড়ক। সড়কটি বিলীনের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষেরা। সাধারণ মানুষ, পথচারি ও স্কুল, মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের কারণে যে কোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণহনির মতো ঘটনাও।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ সুখছড়িকুল সড়কের কামাল কোম্পানী বাড়ি সংলগ্ন অংশে প্রায় ৩০০ ফুট সড়ক সুখছড়ি খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার শত শত মানুষকে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। এখন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে।
জানা গেছে, গত বছরের ভারি বর্ষণের কারণে ভাঙনে খালগর্ভে বিভিন্ন সময় বিলীন হয়ে যায় সড়কটির কয়েকটি অংশ। পর্যায়ক্রমে সড়কটি ভেঙে গিয়ে বিলীন হয়। সড়কটি সংস্কারে নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। সড়কের পূর্ব পাশের আলকুনি পাড়া সড়কটিও ভারী বর্ষণ হলে পানিতে ডুবে যায়। ফলে বর্ষাকালে একরকম যাতায়াত দূঢ়ও হয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। গত বছরের ভারি বর্ষণে সড়কের যে অংশটুকু টিকে ছিল, সেটিও পুরোপুরি ভেঙে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালের ভাঙনে সড়কটি বিলীন হলেও এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বারংবার অবগত করার পরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। অতি দ্রæত সড়ক সংস্কার করে দেয়ার দাবি জানান স্থানীয় হাজার হাজার বাসিন্দা।
লোহাগাড়া সুখছড়িকুল সমাজ পরিচালনা কমিটির সর্দার মো. ইউনুচ জানান, বিগত দিনে আমরা এলাকার মানুষ থেকে কিছু কিছু টাকা সংগ্রহ করে ফান্ড করে সড়কটি আমাদের নিজ উদ্যোগে মেরামত করেছি। এ সড়কটি দিয়ে আমাদের পূর্ব পুরুষের আমল থেকে লোকেরা চলাচল করে আসছে। আমরাও চলাচল করছি। দুর্ভাগ্যের বিষয় সড়কটির কামাল কোম্পানীর বাড়ির সংলগ্ন অংশ ভারী বর্ষণে খালে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে আমরা ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে, বয়স্ক রোগীদের নিয়ে কোনোভাবেই চলাচল করতে পারছি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যাচ্ছে চরম দুর্ভোগ সহ্য করে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, সড়কটি আমাদের একমাত্র চলাচলের পথ। দ্রæত সড়কটি বাস্তবায়ন করা না হলে সামনের ভারী বর্ষণে সুখছড়ি খালের পানির ¯্রােতে আমাদের বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রæত এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশা করেন।
সুখছড়ি আদমের পুকুরপাড় নূরানী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. হাছান জানান, আমরা অনেক দিন ধরে এ ভাঙন নিয়ে কষ্টে যাতায়াত করছি। মাদ্রাসা, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা খুব কষ্ট পাচ্ছে। বর্ষা মৌসমে ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন বলেন, ভাঙনের বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। ভাঙনকবলিত এলাকাটি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, সুখছড়ি খালের ভাঙনে সড়কটির কিছু অংশ বিলীন হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। সড়কের কাজটি বড় আকারে ভাঙন হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারা দ্রæত সময়ে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিবেন বলে আমাকে জানানো হয়েছে।