সীতাকুন্ড আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসছেন কারা?

23

আজ শুক্রবার সীতাকুন্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার সর্বত্র বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা। সবার মুখে মুখে একটি কথা কে হচ্ছেন উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কার গলায় উঠবে বিজয়ের মালা। তবে একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়,সম্মেলন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই নতুন মুখ আসতে পারে। সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি এখন প্রায় চূড়ান্ত। গঠিত হয়েছে একাধিক উপকমিটি। দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, এ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কমিটিতে আসবেন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব। থাকবে চমক। দলের দুটি শীর্ষ পদে(সভাপতি ও সম্পাদক) আসতে পারে নতুন মুখ। তবে এ দুটি পদে কারা আসছেন এমন প্রশ্নের উত্তর দায়িত্বশীলরা কৌশলে এড়িয়ে গেলেও এই নিয়ে রয়েছে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে নানা হিসাব নিকেশ। তবে সভাপতি ও সম্পাদক পদ নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন বাবলু জানান, সীতাকুন্ড হাই স্কুল মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে সম্মেলন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে উপজেলার ৯০টি ওয়ার্ড এবং ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কাউন্সিলররা ভোটাভুটি করে স্ব স্ব ভোট প্রদানে নেতা নির্বাচিত করবেন।
সভাপতি পদে উপজেলা আ.লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া, সাবেক এমপি মরহুম এবিএম আবুল কাসেম মাস্টারের জ্যেষ্ঠপুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, সীতাকুন্ড উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ ইসহাক এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আ.লীগের সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীর মধ্যে আছেন উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বারৈয়ারঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহান, অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে।
প্রথম অধিবেশনে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইসহাকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্ল্যাহ আল বাকের ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমসহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।
ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূল পর্যায়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। কারা সভাপতি-সম্পাদক হচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। সভাপতি-সম্পাদক পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় সরাসরি উপস্থিত থেকে কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করে প্রার্থীরা মাঠ গরম করে রেখেছেন। বিশেষ করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ফেসবুকে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সীতাকুÐ উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর। তিন বছরের মেয়াদের কমিটি সাত বছর পার হলেও দলীয় গ্রুপিংসহ নানা সমস্যায় যথাসময়ে হয়নি সম্মেলনও। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন এমপি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মরহুম এবিএম আবুল কাসেম ও সাধারণ সম্পাদক তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর এবিএম আবুল কাশেম ওই বছরের ২৪ নভেম্বর মারা যান। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ ইসহাক।
দলের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, সীতাকুন্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা সবাই যোগ্য। তাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করলে কারো ক্ষোভ থাকবে না।