সীতাকুন্ডে বাসের ধাক্কায় শিশু নিহত, আহত ৭

1

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বাসের ধাক্কায় একটি পিকআপ ভ্যান উল্টে জাকিয়া ইসলাম (৫) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির মা-বাবাসহ আরও সাতজন। গতকাল শনিবার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার বাঁশবাড়িয়াা ইউনিয়নের ইউনিটেক্স চৌধুরী মার্কেট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় আহত হলেন শিশুটির বাবা জামাল উদ্দিন, মা লাইজু বেগম, ভাই মো. ফয়সাল, নানি সেলিনা বেগম, খালা রিমা আক্তার,খালাতো বোন সুমাইয়া আক্তার ও গাড়ির চালক মো. রায়হান। প্রাথমিকভাবে জানা যায় তারা ভোলার বাসিন্দা। ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে চাকরি করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম আসছিলেন। জানা যায়, ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় থেকে ঢাকা-মেট্রো- ঠ-১১-২৮১০একটি পিকআপ ভ্যানে বাসার আসবাবপত্র নিয়ে জামাল উদ্দিন ও তার পরিবার বেসরকারি চাকরি করার সুবাদে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য আসছিলেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশের বাঁশবাড়িয়াা ইউনিয়নের ইউনিটেক্স চৌধুরী মার্কেট এলাকায় অতিক্রমকালে একইমুখী অপর একটি বাস পিকআপকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে আসবাবপত্রবাহি পিকআপ ভ্যানটি উল্টে গিয়ে মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে শিশু জাকিয়া ইসলাম নিহত হয়। একই ঘটনায় আহত হয় পিকআপ ভ্যানটির পিছনে বসা একই পরিবারের আরো সাতজন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সীতাকুন্ড ফায়ার সার্ভিস এসে উদ্ধার করে আহতদেরকে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
নিহত শিশু জাকিয়ার বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, অনেক দিন যাবত ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। বর্তমানে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি হয়। তাই ঘরের আসবাবসহ মালামাল পিকআপ ভ্যানটিতে করে চট্টগ্রাম আসছিলাম। পিকআপের কেবিনে চালক ও সহকারী বসা ছিলেন। আমি আর আমার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা পিকআপ ভ্যানের পেছনে রাখা মালামালের উপর ছিলাম। হঠাৎ বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে আমাদের পিকআপ ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে মহাসড়কের খাদে পড়ে যায়। মহুত্বে আমার একটা স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। আমরাও আহত হই’।
সীতাকুন্ডের বার-আউলিয়া হাইওয়ের থানার ওসি আবদুল মোমিন বলেন, বাঁশবাড়িয়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস পিকআপ ভ্যানটিকে ওভারটেক করার চেষ্টা করছিল। ওভারটেক করাকালীন বাসটির পেছনের অংশের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানটির সজোরে ধাক্কা লাগে। এ সময় পিকআপ ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে উল্টে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই এক শিশু নিহত হয় এবং পিকআপটিতে থাকা একই পরিবারের আরো সাতজন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি আমরা উদ্ধার করেছি। ঘটনাস্থলের আশপোশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাসটি শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পিকআপটিতে করে ঘরের আসবাবপত্রসহ ঘরের কর্তার চাকুরির সুবাদে আশুলিয়া থেকে চট্টগ্রাম আসছিলেন’।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার উপজেলার মসজিদ্দা ইলিয়াছ পেট্রোল পাম্পের সামনে চা দোকানে একটি ড্রাম ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দোকানে ঢুকে যায়। এতে দোকানের ভেতরে থাকা রাকিব (১৭) নামে এক কিশোর নিহত হন। পরে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস গাড়িটি সরিয়ে চাপা পড়া রাকিবের লাশ উদ্ধার করেন।
অপরদিকে দুপুর ১২ টার সময় সরোয়ার আলম (৩৬) নামে এক পথচারী মহাসড়ক পার হওয়ার সময় লোহা বোঝাই অপর একটি ড্রাম ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি ইউনিটেক্স স্পিনিং সুতা কারখানায় কাজ করতেন।