সীতাকুন্ডে আ.লীগের প্রচারণায় পেট্রোল বোমা হামলা

68

সীতাকুন্ডে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাহেদসহ দগ্ধ হয়েছেন ৩ জন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭ নেতাকর্মী।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় চট্টগ্রাম-৪ আসনের ভাটিয়ারীর মাদাম বিবিরহাটের জাহানাবাদ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মসিউদ্দৌলা রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুন্ড সার্কেল) শর্মা রানী সাহা, সীতাকুন্ড থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন, ওসি (তদন্ত) মো. আফজল হোসেন, আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন।
প্রত্যক্ষদর্শী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ- ভাটিয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাদাম বিবিরহাটের জাহানাবাদ গ্রামে নৌকা প্রতীকের গণসংযোগ করছিলেন দিদারুল আলম। এ সময় বিপরীত দিক থেকে ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার সময় মুখোমুখি হয়ে যায়। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের মিছিল থেকে বাঁশের তৈরি ধানের শীষের চুঙ্গা থেকে আওয়ামী লীগের মিছিলে পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। তারা রড, বাঁশ, গাছ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় নৌকার সমর্থকদের উপর। এই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন (২৯), আবু ছালেহ (৪৬) ও যুবলীগ নেতা নুর উদ্দিন (৪২) দগ্ধ হয় এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার সহিদুল ইসলাম সাহেদ, তসলিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা শামীম, হানিফ, রায়হান, তৈয়ব উদ্দিন ও শাহজাহান গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
চমেক হাসপাতাল ফাঁড়ির উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন জানান, ‘পেট্রোল বোমায় ৩ জন, রডসহ বিভিন্ন বস্তুর আঘাত পেয়ে ৫ জন চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে’।
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আযম জসিম বলেন, ‘আমি ইউপি মেম্বার ও ছাত্রলীগ নেতা সাহেদসহ নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাদামবিবিরহাট জাহানাবাদ এলাকায় নৌকা প্রতীকের গণসংযোগ করছিলাম। এ সময় বিপরীত দিকে থেকে খোরশেদ মেম্বার ও মুসলিম উদ্দিন রাজার নেতৃত্বে ১৫০-২০০ জনের সংঘবদ্ধ দল ধানের শীষ প্রতীকে স্লোগান দিয়ে তাদের মিছিলের ভেতর থেকে এসব পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করে’।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন জানান, ‘আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেলে আহতদের দেখে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে তদন্তের স্বার্থে রেসকিউ টিম, রিজার্ভ টিম, মোবাইল টিম ও ক্যামিক্যাল টিম নিয়ে যাই।
সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপির আহবায়ক তফাজ্জ্বল হোসেন ঘটনার সাথে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উনারা (আ’লীগের মিছিলকারীরা) ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থনে আয়োজিত গণসংযোগে অংশগ্রহণ করা নেতা-কর্মীদের আক্রমণ করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা এ হামলা ঘটনা ঘটায়’।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘পেট্টোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপের বিষয়টি শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শুনেছি এতে ৩ জন দ্বগ্ধ ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব’।