সীতাকুন্ডে অভিযুক্ত শাশুড়ি গ্রেপ্তার

1

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহবধূর শাশুড়ি সাজেদা আক্তার (৫৫) কে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ। গত শনিবার রাতে মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও গৃহবধূর অভিযুক্ত স্বামী মোছলেম উদ্দিনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা গেছে, সীতাকুন্ড উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের নূর মোস্তফার ছেলে মোছলেম উদ্দিনের সাথে মিরসরাই উপজেলার জোরালগঞ্জ থানার দক্ষিণ সোনা পাহাড় এলাকার নুরুল আফসারের মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বছরখানেক সংসার ঠিকঠাক চললেও প্রতিদিন রাতে নেশা করে ঘরে এসে বউকে মারধর ও নির্যাতন করত রিকশাচালক স্বামী মোছলেম। এরই ধারাবাহিকতায় স্বামী ও শাশুড়ি মিলে আগুন দিয়ে গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত গৃহবধূর স্বামী মোছলেম উদ্দিন (৩২) ও শাশুড়ি সাজেদা আক্তারের (৫৫) কে গ্রেপ্তারের চেষ্টার মধ্যে শাশুড়িকে গ্রেপ্তারের সংবাদ জানালো থানা পুলিশ।
গত শনিবার নিহত গৃহবধূর পিতা নুরুল আফসার বাদী হয়ে সীতাকুন্ড থানায় এই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
নুরুল আফসার জানান, শনিবার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টায় মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে স্বামী মোছলেম উদ্দিন ও শাশুড়ি সাজেদা আক্তার আমার মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে নির্যাতন করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় তার মেয়ের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের আইসিইউতে ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় সে মৃত্যুবরণ করে। হাসপাতালে ডাক্তাররা বলেছেন- আমার মেয়ের শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। মোছলেম উদ্দিনের সঙ্গে ১২ বছর আগে আমার মেয়ে ফাতেমা আক্তারের বিয়ে হয়েছে। মুসলিম উদ্দিন পেশায় রিকশাচালক। অধিকাংশ সময় মদ-গাঁজা সেবন করে আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো সে’।
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় আমি সীতাকুন্ড থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেয়নি। বলেছেন দাফন শেষ করে আসেন, তারপর মামলা করেন। এরপর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং থানায় মামলা না নেয়ার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বগাচতর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানার সামনে শনিবার সকালে একটি মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন পরবর্তী মামলা নেয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি হত্যা মামলা নিয়ে অভিযুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি। বাকি আসামিকেও গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।