সিয়াম সাধনা সমৃদ্ধি অর্জনের চাবিকাঠি

2

আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী

মুমিন মুসলমানদের জন্য পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনা হচ্ছে আল্লাহর অবারিত নিয়ামত লাভের একটি মোক্ষম সময়। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে গুনাহ্ সমূহ মুছে দিয়ে নেকীসমূহ প্রস্ফুটিত করে নিজ জীবন উজ্জ্বল ও বরকতময় করার মৌসুম। মুমিন জীবন আল্লাহর রহমত ও করুণা লাভের পথে সাধনায় মগ্ন হওয়ার সুবর্ণ সময় মাহে রমজান।
পার্থিব জীবনে অনেকেই আল্লাহ্-রাসূলের প্রদর্শিত পথ ভুলে সদা-সর্বদা গুনাহ্ ও নাফরমানিতে লিপ্ত থাকার দরুণ জীবনে বরকত শূণ্য হয়। রিজিকের হায়াতের আল্লাহর নেয়ামত লাভের পথ সংকুচিত হয়ে যায়। এসব বান্দার জন্য রয়েছে পূণ্যময় আমলের দ্বারা বরকত পূর্ণ সমৃদ্ধ জীবন লাভের সুখবর। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- পূণ্য আমল ও আল্লাহ-রাসূলের আদেশ পুরোপুরি মেনে চললে রিজিক ও ধন সম্পদে অবশ্যই বরকত হয়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- এবং যারা আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার জন্য মুক্তির উপায় বের করে দেন এবং তাকে ওই স্থান থেকে রিজিক দেন যা তাঁর ধারণায়ও নেই। (আল কুরআন, সূরা তালাক-২, ৩)অর্থাৎ যেসব লোক গুনাহ্ এবং পাপ কার্যাদী থেকে দূরে থাকবে এবং পূণ্য কার্যাদী আমল করবে সর্বশক্তিমান দয়ালু আল্লাহ তাদেরকে বিপদাপদ এবং কষ্ট থেকে মুক্ত রাখবেন। যারা নিজ জীবনে কৃত পাপসমূহ থেকে তাওবা করে এসব মন্দ পাপ কার্যাদি সব সময়ের জন্য পরিত্যাগ করে এবং আল্লাহর নিকট এজন্য সাহায্য কামনা করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে- ’এবং যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেবেন’। লক্ষ্য করুন, আমরা জীবনের সমৃদ্ধির জন্য আরাম আয়েশ লাভের জন্য সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য কতোজনের কাছে ছোট হই। কতোজনের নিকট হাত পাতি, অথচ আমরা একবারও চিন্তা করিনা আমাদের সকলের প্রভু সর্বশক্তিমান ও সর্বাধিক দয়ালু মহান রব আল্লাহ’র। ওই ওয়াদার উপর ভরসা কেন করিনা? নিশ্চিত জেনে রেখ, যদি জীবনে একবার প্রকৃত মালিক আল্লাহর দরবারে মাথা নত করে থাকি তাহলে দেখবে জীবনে দ্বিতীয়বার আর কারো নিকট হাত পাততে হবে না।
মহান আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করেন এবং মহা প্রতিদান দেবেন’। অতএব যারা বিপদাপদ থেকে মুক্তি পেতে চায়, মান-সম্মান চায়, অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে চায় তাদের জন্য একটি পথ খোলা রয়েছে আর তা হলো নিজ জীবনের কৃত গুনাহ্ থেকে তাওবা করে সৎপথ অনুসরণ করা। তাহলেই জীবনের সর্বক্ষেত্রে সমৃদ্ধি আসবে, সময়ের মধ্যে সন্তান-সন্ততির ক্ষেত্রে, রিজিকের মধ্যে প্রত্যেক বিষয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধি এসে যাবে। মাহে রমজান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করার, সৎপথ লাভ করার, গুনাহের ক্ষমা লাভের ও সদা সর্বদার জন্য আল্লাহর সমীপে আত্মসমর্পণের মোক্ষম সময়। আল্লাহ আমাদের রমজানের পূণ্যময় আমলসমূহ সদা-সর্বদা অব্যাহত রেখে পূণ্যময় সমৃদ্ধ জীবন লাভের তাওফিক দিন। আমিন…।
লেখক : সহকারী সম্পাদক, মাসিক তরজুমান