নিজস্ব প্রতিবেদক
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)’র বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের (সাবেক সিবিএ) উদ্যোগে এক কর্মীসভায় নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে সাবেক সিবিএ নেতার বক্তব্যে কয়েকদিন ধরে তোলপাড় চলছে। গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দর অকশন শেড সংলগ্ন শ্রমিকদলের কার্যালয়ে এক কর্মীসভায় সাবেক সিবিএ নেতা মো. হুমায়ুন কবীর উপদেষ্টাকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। তবে তার বক্তব্য ভুলবশতঃ অনিচ্ছাকৃত এবং অজ্ঞতাবশত বলে উল্লেখ করেন তিনি। এমন অসৌজন্যমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করে উপদেষ্টার নিকট ক্ষমা প্রার্থনাও করেন এই সিবিএ নেতা।
মো. হুমায়ুন কবীর চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও পরিদর্শন বিভাগের সুপারিনটেন্ডেন্ট অডিট হিসেবে কর্মরত আছে। তিনি চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল (সাবেক সিবিএ) এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। এনসিটি বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। সর্বশেষ এক কর্মসূচিতে উপদেষ্টাকে নিয়ে বক্তব্যের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় আসেন তিনি।
এদিকে তার এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কৈফিয়ত তলব চেয়ে চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ১ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস শাকুর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে হুমায়ুন কবীরের কাছে এ কৈফিয়ত তলব করা হয়। চিঠিতে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, মো. হুমায়ুন কবীর, সুপারিনটেনডেন্ট অডিট বিগত ২৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে অসৌজন্যমূলক কটূক্তি প্রদান করে চট্টগ্রাম বন্দরে অবাঞ্চিত ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। যা চবক এর প্রশাসনিক এবং শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এ ধরনের কার্যকলাপে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণœ হয়েছে। এরূপ অসৌজন্যমূলক বক্তব্যের জন্য তাকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে সাবেক সিবিএ নেতা হুমায়ুন কবীর বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টাকে নিয়ে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তা নিছক ভুলবশতঃ অনিচ্ছাকৃত এবং অজ্ঞতাবশত বলে উল্লেখ করেন। তার এমন অসৌজন্যমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করে উপদেষ্টার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
চিঠিতে হুমায়ুন কবীর উল্লেখ করেন, গত ২৮ জুন উপদেষ্টার নাম উল্লেখ করে যে বক্তব্য প্রদান করেছি তা নিছক ভুলবশতঃ অনিচ্ছাকৃত এবং অজ্ঞতাবশত ছিল। চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও সুযোগ সুবিধা আদায়ের নিমিত্তে বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবত আমি কাজ করে আসছি। নৌ-পরিবহন উপদেষ্টাকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্যের কোনরূপ পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও চিঠিতে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রার্থনা করেন।
প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস শাকুর জানান, উপদেষ্টাকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্যের বিষয়ে কৈফিয়ত তলব করে তাকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। চিঠির জবাব পেয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।