নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর আকবর শাহ থানাধীন সিটি গেট এলাকায় বেলাল নামে এক চালকের সাথে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যদের বাকবিতন্ডায় কয়েক দফায় সড়ক অবরোধ করেছে ট্রাক চালক শ্রমিকরা। বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিরতি দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। গতকাল সকাল ১০টার দিকে বাকবিতন্ডার ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি পূর্বদেশকে নিশ্চিত করেন আকবরশাহ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘মূল সড়কের উপর ট্রাক পার্কিংকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সদস্যের সাথে চালকের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা এসে সড়ক বন্ধ করে দেন। পরে ওই চালকের নিরাপত্তাজনিত কারণে ট্রাফিক সার্জেন্ট আকবরশাহ থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের ডিসি স্যার ভাল বলতে পারবেন।’
চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের আকবর শাহ থানার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দৌলা মঞ্জু বলেন, বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে মোস্তফা হাকিম হাউজিং সোসাইটি সড়কের একটি গোডাউনে আনলোড করতে ট্রাকটি আসে। কিন্তু সামনের ট্রাকগুলো আনলোড হতে একটু সময় লাগার কারণে বেলালের ট্রাকটি মূল সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তাকে মামলা দিবেন বলে হুমকি দেন। পরে তিনটি ট্রাকের ডকুমেন্টস নিয়ে যায় এবং একটি গাড়ি জব্দ করার কথা বলে। সেইসাথে চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় সার্জেন্ট। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চালক-শ্রমিক সদস্যরা মূল সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
বন্দর ট্রাক কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি শফি উল্লাহ বলেন, চালক বেলালের সাথে আমি কথা বলেছিলাম। সে আমাকে জানিয়েছে, রেকার হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন, তিনি নাকি টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে এত ঝামেলা তৈরি হয়েছে। পরে আমরা দুপুরে ডিসির সাথে বসে সমাধান করে ফেলি।
এসব বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নিষ্কৃতি চাকমাকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো উত্তর আসেনি।
তবে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) শাহ মো. আরিফুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘রাস্তার উপর গাড়ি রেখে দেয় ট্রাকচালক। পরে আমাদের সার্জেন্ট ব্যবস্থা নিতে গেলে কিছুক্ষণ সমস্যা হয়। তবে বেশিক্ষণ এটি ছিল না। এসব তারা ইস্যু করেছে।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন অন্যান্য যানবাহন ও যাত্রীরা। ঢাকা থেকে আসা চট্টগ্রামের অনেক যাত্রী সিটি গেট এলাকায় নেমে বিকল্প পরিবহনে গন্তব্যে যান। বাকি যানগুলো সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাঝখানে ২০ মিনিট করে দুই বার যান চলাচলের সুযোগ করে দেয় ট্রাক কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা। পরে পুনরায় মূল সড়ক বেরিকেড দিয়ে অবরোধ করে দেন। দেড়টার দিকে সমযোতার কথা আসলে পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সিটি গেট এলাকার দায়িত্বরত টিআই মো. মনিরুজ্জামান ভ‚ঁইয়া বলেন, আজকে (বুধবার) আমি ফায়ারিং এ থাকাতে ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে শুনেছি, চালকে খারাপ ব্যবহার করাতে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে।