সালমান শাহর হত্যার বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা: ন্যায়বিচার প্রত্যাশা

1

নূরনাহার নিপা

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন চিত্রনায়ক সালমান শাহ। তাঁর হঠাৎ ও রহস্যময় মৃত্যু আজও জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়ে রেখেছে। সময়ের পরিক্রমায় বহু তত্ত্ব, মতামত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। বিচারপ্রক্রিয়া অনেকটাই থমকে আছে, কিন্তু জনগণের আশা আজও মরে যায়নি। সালমান হত্যার বিচার শুধু একজন নায়কের জন্য ন্যায়বিচার নয় এটা একটি প্রজন্মের কাছে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রতীক। সালমান শাহ হত‍্যাকান্ডের বিচারের তদন্তের স্বার্থে যেসব ব্যক্তিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন…
লুসি, সালমানের শাশুড়ি যিনি কখনও সালমানকে পছন্দ করতেন না এবং যিনি উচ্চাভিলাষী ছিলেন এবং অনেক কিছু জানেন। শাবনুর চতুর এই নায়িকা ধরা দুঃসাধ্য হবে যেহেতু তিনি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। শাবনূর কিন্তু তাকে রিমান্ডে নেয়া উচিত কঠিন ভাবে।সত্য উন্মোচন করতে এটাই একমাত্র পথ। শাবনূরের আজকের অবস্থান শুধু সালমান শাহ্ এর জন্য। শাবনূর যতই বলুক সালমান তাকে বোনের চোখে দেখতো?
বেশ কিছুদিন আগে ইন্টারভিতে সালমানের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক দাবী করে বলেন, সালমান শাহ যদি ওকে ছোট বোন বলে ডাকে তাহলে শাবনূর পেগনেট কি করে হয়। কারণ সে যখন সালমানের সঙ্গে একের পর এক ছবি করতেছিল, তখন সালমান শাবনুরকে বলেছিল অন্য নায়কের সঙ্গে কাজ করতে পারবে না। তারপর থেকেই তো শাবনুর অন্য নায়কের সঙ্গে কাজ করা ছেড়ে দিয়েছিলো, যদি সালমান ওকে ভালোই না বাসতো তাহলে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত কিভাবে নিলো। শাবনূর তা অপ্রকাশ্যতা ন্যাকামি করে বলে যাচ্ছে তাকে পিচ্ছি বলেই ডাকতো। আমি বলছি না শাবনূর হত্যার সাথে জড়িত তবে সালমানের বন্ধু হয়েও কোনদিন ২৯ বছরে কোন প্রতিবাদ সালমানের জন্য শাবনূর করতে পারেনি কোন বিচার দাবী করে নাই কেন?
শাবনূরের সাথে সালমানের প্রেম ছিল সেটা মিথ্যা না। সামিরাকে তালাক দিতে চাপ দিতো শাবনুর- এই নিয়ে প্রচÐ ঝগড়া হতো সালমানের সঙ্গে সামিরার। সামিরা আরো দাবী করেন তাদের সংসারে শাবনূরের জন্য অশান্তিপূর্ণ। তখন সামিরা বলেছিল শাবনুরের সঙ্গে কাজ করতে পারবে না, তখন সালমান সিদ্ধান্ত নেন সামিরাকে তালাক দেওয়ার। এই কথা গুলো সালমানের সাবেক স্ত্রী সামিরার সুত্র জানান। তবে সামিরা লোভী মহিলা তার সাথে কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক ছিল। তিনি সালমানকে ভালোবাসলে এতো দ্রুত তিনটা বিয়ে করতে পারতো না। সালমানকে কেউ বুঝতে চাইনি না তার বউ না তার প্রেমিকা। আফসোস সেখানে সবাই স্বার্থপর কেউ কখনো বিচার দাবী করেনি….!
সামিরার মায়ের বিউটি পার্লার ছিলো থাইল্যান্ডে আর থাইল্যান্ডে বসবাস করেন- আজিজ মোহাম্মদ ভাই সেখানেই পরিচয়- বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সামিরার মা লতিফা হক লুসির সঙ্গে। আর সামিরার মা লুসি একজন জাপানি মেয়ে- থাইল্যান্ডে তার বিউটি পার্লার ব্যাবসা ছিলো। তার মানে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আর সামিরার পরিবারের সাথে পরিচিত। আজিজ মোহাম্মদ ভাই এমন একজন কুখ্যাত মানুষ সিনেমা জগতটা তার অধীনে তার কুখ্যাতির কথা সবাই জানে অথচ কেউ কখনো মুখে বলার সাহস নেই। সে অনেক নায়ক খুনের সাথে জড়িত কখনো তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সে সামিরার সাথে অসভ্য আচারণ করেছে পার্টিতে
সালমান আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে চড় মারছিল। সালমানের মতো এমন সাহসসিকতা আর কারো ছিল না। সে চড় হজম করার মতো মানুষ আজিজ মোহাম্মদ ভাই না। তিনি এই খুনের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত। দ্রæত চলচ্চিত্রে সুপারস্টার হওয়া ফিল্মের অনেকের চোখের বালি সালমান শাহ্। সামিরা সন্দহপ্রবণতা সালমানের জীবনটা নরকে পরিণিত। সামিরার একাধিক পরকিয়া প্রেমিক থাকা সালমান তালাক দেওয়ার ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সালমানের, হয়তো আর কোন অফশন ছিল না। সামিরা প্রতিহিংসা বুকের ভেতর, ২৯ টা বছর আত্মহত্যা না হত্যা এখনো এতো প্রমান থাকার পরও ক্লিয়ার না। তারপরেও সর্বপুরি আইন আছে আর আইনের হাত লম্বা- খুনিরা যতো চালাকই হোক না কেন, ধরা তাকে পড়তেই হবে।
সামিরা যিনি রুপ বিক্রি করে ধরা কে সরা জ্ঞান করেন। আজিজ মোহাম্মাদ ভাই এর নাম সবসময় এড়িয়ে যান, এবং ওই বিষয়ে কথা বলতে নারাজ। ডন, ভালোমানুষের মুখোশধারী বোকা শয়তান। এদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে তারা কে কে জড়িত। ডন যদি মুখ খোলে, তাহলে জানা যাবে আরও কারা এই হত্যার পেছনে ছিল। তার বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারে চক্রের পুরো চিত্র। আরও যাদের ইন্টারোগেট করলে বেরিয়ে আসবে ‘থলের বিড়াল’ তদন্তে সহায়তা করতে পারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ও সম্পৃক্ত ব্যক্তি, যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে গোপন তথ্য বের হয়ে আসবে।
মুস্তাক ওয়াইজ- একদিকে তিনি ছিলেন সামিরার দ্বিতীয় স্বামী, অন্যদিকে সালমান শাহ-এর বন্ধু। এই দ্বিমুখী সম্পর্ক তাকে সন্দেহের কেন্দ্রে নিয়ে আসে। হয়তো তিনি এমন কিছু জানেন যা এতদিন মুখ ফোটেনি। রিমান্ডে এনে সত্য বের করা দরকার। শাবনূরের মা ও বোন- শুধু শাবনূরই নয়, তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন সালমানের ঘনিষ্ঠ পরিসরে জড়িত। বিশেষ করে, মৃত্যুর আগে কিছু দিনের যোগাযোগ এবং ফোনালাপ নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসতে পারে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য। সালমান শাহ মৃত্যু খবর পেয়ে অনেক তরুণীরা আত্মহত্যা করেছে। বিভিন্ন ভাবে সালমান মৃত্যু রহস্য যেন শেষ নেই। কেন কি কারণে সালমান মতো স্মার্ট হিট একজন মহানায়ক আত্মহত্যা করেছিল।
সালমান মৃত্যু আত্মহত্যা আজ ও মানুষ কে তার রহস্যময় মৃত্যু কাদায় কিন্তূ তার সাবেক স্ত্রী কয়েক বার বিভিন্ন বার যখন তাকে জিজ্ঞাস করা হতো সে আত্মহত্যা বলেই এতোটা কনফিডেন্ট সত্যই অবাক হতে হয় তার এমন আচারণে। তার চোখে, মুখে কোথায় আমরা একটু আবেগ খুঁজে পাই না যেন আত্মহত্যা এতটা ইজি।
সে বাড়িতে ছিল সে ছাড়া কেও সালমান কে ফাঁসি তে ঝুলতে দেখে নি তার পর কেন প্রশাসন আইন তাকে এখনো ধরতে পারছে না। কেন আজ ও সে ধরা ছোয়ার বাহিরে। অনেক প্রমান সাক্ষী থাকার পরও খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না। ‘বুকের ভিতর আগুন’ নিয়ে সালমানের মা ২৯ টা বছর চোখের জলে বিচার চেয়েছেন, ছেলে যেন শান্তিতে সংসার করতে পারে আলাদা বাসা নিয়ে থেকেছেন। এমন মা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার, এতোটা ধৈয্য ২৯ টা বছর তিনি ক্লান্ত হয়নি আল্লাহর কাছে তার প্রিয় সন্তানের বিচার দাবী করেছেন শ্রদ্ধা এমন মাকে। মা ছেলেকে আলাদা করেও সামিরা শান্ত হয়নি।। আমরা ‘বিক্ষোভ’ চালিয়ে যাব । আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, এই হত্যাকান্ডের ‘বিচার হবে’। এই হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়া আমাদের যেমন দাবি তেমনি তার মা নীলা চৌধুরীরও ‘মায়ের অধিকার’। সন্তানের প্রতি মায়ের ‘স্নেহ’, ‘আশা ভালবাসা’, ‘প্রেম শক্তি’ একজন মাকে ছেলের হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়ার সাহস যোগায়। কলিজার টুকরা সন্তান হারিয়ে মায়ের কাছে যেন বিষাদময় এই ‘জীবন সংসার’। তাছাড়া শুধু এক মা নয়, প্রিয় নায়ক সালমান ছিল সারা বাংলার মানুষের ‘অন্তরে অন্তরে’। যদিও কোনদিন আর ‘প্রেম পিয়াসী’ হয়ে ফিরে আসবেনা তবুও আল্লাহর কাছে চাইব ওপারে হয় যেন তোমাদের মা-ছেলের ‘মহামিলন’। “দেনমোহর’ দিয়ে বিয়ে করে সামিরাকে ঘরে এনেছিলে বানিয়েছিলে তোমার ‘প্রিয়জন’। কিন্তু সেই কালনাগিনীর বিশ্বাসঘাতকতায় তোমার ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ অপূর্ণতাই রয়ে গেল। তবুও আমরা তোমাকে যতটুকুই পেয়েছি তুমি এখনো আমাদের ‘স্বপ্নের নায়ক’। তাইতো তোমার প্রতি এই ভালোবাসার কারণে, তোমাকে নিশংস ভাবে হত্যা করার বিচার আমরা চাই। তোমার প্রতি ভালোবাসার দায়বদ্ধতা থেকেই এই যুদ্ধ এটাই ‘প্রেম যুদ্ধ’ । যেদিন দেখব সালমান হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে সেদিন আমরা শান্তি পাবো। আমাদের চোখ থেকে ঝরবে ‘আনন্দ অশ্রু’। প্রকৃতি ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয়না। ইনশাআল্লাহ সামনে আরো কিছু দেখতে পাবেন সালমান ভক্তরা। ২৯ বছরের ধুয়াসার সমাধান হবে। আসামিরা আত্মসমর্পণ করবে। এক সন্তানহারা মা, এক ভাইহারা ভাই, আর কোটি সালমানভক্তের চোখের পানি বিফলে যাবে না।
আমরা চাই সুস্থ তদন্ত ও সঠিক ন্যায়বিচার। বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ্ এর জন্য এই দাবি আমাদের সবার। মনে প্রাণে সালমান ভক্তরা বছরের পর বছর মানববন্ধন করে এই বিচার নিয়ে লড়ে গিয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন, আমি এবং আমরা চাই হত্যা মামলার সঠিক বিচার হোক এবং তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক, হত্যাকারীরা কেউ যেন দেশ থেকে পালাতে না পারে।
সালমান শাহ্! তাকে সবার সাথে তুলনা করলে হবে না। সালমান একমাত্র নায়ক যার মৃত্যুর ২৯ বছরও জনপ্রিয়তা আরো বাড়ছে। যেদিন আদালত সালমান শাহ হত‍্যার বিচারের সালমান হত‍্যাকারীদের সাজার শুনানি ও কার্যকর করবে সেদিন মানুষ খুশিতে রাস্তায় নেমে পড়বে, সেদিন হবে সালমান ভক্তদের আনন্দ উল্লাস। স্বপ্নের নায়কের হত্যার বিচার স্বপ্নের পৃথিবীতে আমরা দেখে যেতে চাই…!
লেখক : প্রাবন্ধিক