পূর্বদেশ ডেস্ক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির যেসব নেতাকর্মী সামনের নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন- তারা সাবধান হন। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার দেয়াল আছে। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক রাজশাহী বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে আইনজীবীর প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচার পড়ে গিয়েছে, পালিয়ে গিয়েছে- তারা তো বসে নাই, তারা তো ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়- কেস (মামলা) তো উঠবেই না বরং নেতাকর্মীদের নামে দ্বিগুণ হয়ে জ্যামিতিক হারে ২০টা মামলা হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনাও কিন্তু আছে। সেই সম্ভাবনাকে যদি নস্যাৎ করে দিতে হয়, তাহলে আজকে থেকে আপনাদের প্রত্যেককেই কেয়ারফুল হতে হবে। খবর বিডি ও বাংলা ট্রিবিউনের।
তিনি বলেন, আপনাদের একটাই টার্গেট হতে হবে, জনগণ, জনগণ অ্যান্ড জনগণ। এর বাইরে যদি আপনি কিছু চিন্তা করেন, তাহলে পতিত যে স্বৈরাচার তারা সফল হবে। তারা সফল হলে আইনজীবী সহকর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী কেস আপনাদের মিটবে না। বরং মাথার ওপরে আরও ১০টি, ২০টি কেস চেপে বসবে। আপনাদের নিজেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উপায় একটায় জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে হলে উপায় একটায় জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনি যখন রাজনৈতিক কর্মী হয়েছেন এর বাইরে কোনও উপায় নাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। আপনারা বিভিন্ন সভা ও দলীয় মিটিংয়ে বলেন- জনগণ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। আজকের পর থেকে সামনের দিনগুলো জনগণের আস্থা আপনাদের ধরে রাখতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। পতিত স্বৈরাচার সরকার ইচ্ছা করেই করেনি- প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য। এটা আন্তর্জাতিক লবি, আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণের ইচ্ছে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গবেষণায় উঠে আসছে বাংলাদেশের অনেকাংশ, অর্ধেক বা তার কম অংশ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই দেশের মানুষকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
এদিকে গতকাল চুয়াডাঙ্গার টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে মানুষ যে আন্দোলন করেছে, স্বপ্ন দেখেছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দেশে নির্বাচন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আজ সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। এই সংস্কারের কথা বিএনপি বলেছে, আরো দুই বছর আগে। যে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এক যুগের বেশি সময় ধরে এদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখে আসছিল, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দেশে নির্বাচন প্রয়োজন। দেশের মানুষের ক্ষমতাকে দেশের মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচন প্রয়োজন। এই দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের। মূল দায়িত্বটা তাদের।
বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে মন্তব্য করে বিএনপি নেতা দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আপনারা বলেন, বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী দল। তাহলে আপনাদের প্রত্যেককে আজ নিজেদের সেইভাবে গড়ে তুলতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন যত দেরিতে হবে, এই দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসুবিধা, এই দেশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা, এই দেশের কৃষকদের সমস্যা, এই দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা, এই দেশের বিচারব্যবস্থার সমস্যা, এই দেশের প্রশাসনের সমস্যা, যতগুলো সমস্যা এই স্বৈরাচার করে গিয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি যাবে। একমাত্র একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব ধীরে ধীরে দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা।