সাত বছরের প্রকল্পে এক বছরেই অগ্রগতি ৪৫%

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা-জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রথম ৬ বছরে অগ্রগতি হয় ৩৫ শতাংশ। প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, বিলম্বে কাজ শুরু, বন্দর এলাকায় ভূমি জটিলতাসহ নানা কারণে ধুঁকতে থাকা প্রকল্পটির শেষ এক বছরে গতি ফিরে। সর্বশেষ অর্থবছরে সরকার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এতে প্রকল্পকাজ এগিয়েছে ৪৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সবমিলিয়ে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থ বছরের মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ কাজ শেষ করে প্রকল্পের ইতি টানতে চায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিভাগ-১) শওকত ইবনে সাহীদ পূর্বদেশকে বলেন, ‘২০২৪ সালের জুনের আগে প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল ৩৫ শতাংশ। শেষ এক বছরে সরকার প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দ বেশি পাওয়ায় কাজের অগগ্রতিও ছিল আশানুরূপ ছিল। এক বছরেই প্রকল্পে ৪৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ৮০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্প কাজ শেষ হবে।’
পাউবো সূত্র জানায়, এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ের চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা-জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদন হয় ২০১৮ সালে। ২০২৪ সালের মধ্যেই প্রকল্পটি শেষ হওয়ার টার্গেট ধরা হয়। ২০১৯ সালে এপ্রিলে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পর পরের বছরের জুনে প্রকল্পের ভৌতকাজ আরম্ভ হয়। এর মধ্যে বন্দর এলাকায় প্রকল্পের কিছু অংশ বাদ গেলে সংশোধীন প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় এক হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে বন্দর এলাকায় ভূমি জটিলতা থাকায় প্রায় ১২ কিলোমিটার ফ্লাডওয়াল বাদ দেয়া হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম-১ ও রাঙামাটি বিভাগের প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম-১ বিভাগে ৪০ শতাংশ ও রাঙামাটি বিভাগে ৬০ শতাংশ কাজ হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এ প্রকল্পে ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৩০৮ কোটি টাকা ভূমি ব্যয় ও ৪৪২ কোটি টাকা নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হয়েছে। পতেঙ্গা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রিটার্নিং ওয়াল, ১১টি রেগুলেটর ও ২ দশমিক ১০০ কিলোমিটার ফ্লাডওয়ালনির্মাণ করা হবে। হাটহাজারীর মদুনাঘাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত ৬ দশমিক ৮৮৫ কিলোমিটার ফ্লাডওয়াল, এক কিলোমিটার তীর রক্ষা কাজ, ১০টি রেগুলেটর নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব কাজের প্রায় শেষ হয়েছে। তবে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণে। প্রকল্পে ছয় হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত মে মাসে ৩০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ায় ৫ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হয়েছে। ভূমি মালিকরা টাকা পাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমার অংশে চলমান ১০টি রেগুলেটরের মধ্যে আটটির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি দুটির কাজ চলমান আছে। ভূমি অধিগ্রহণে অর্থ বরাদ্দ পাওয়ায় ভালোই অগ্রগতি হয়েছে। মোহরার দিকে লোকালয়ে এখনো পানি প্রবেশ করে। যে কারণে মানুষজন কাজ যাতে দ্রুত শেষ করে সেজন্য সহযোগিতা করায় কাজ করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না।’