সীতাকুন্ড প্রতিনিধি
নিখোঁজের তিনদিন পার হতে চললেও এখনো উদ্ধার হয়নি সীতাকুন্ড উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড দক্ষিণ মাহমুদা বাদ জেলে পাড়ার মৃত শীতল জলদাসের পুত্র রাম জলদাস। এদিকে ছেলেকে হারিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলের সন্ধানে সাগর পাড়ে ঘুরছেন রাম জলদাসের মা নুপুর বালা জলদাস। ছেলেকে ফিরে পেতে সাগর পাড়ে যাওয়া সকলের কাছে আর্জি দিচ্ছেন আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বালু খেকোদের হাতে অপহরণের পর উদ্ধার হওয়া লিটন জলদাস বলেন,বালু উত্তোলনকারী বালু খেকোরা এত বেশি শক্তিশালী যে আমার ভাইকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেয়। আর আমাকে অপহরণ করে হাতিয়া নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার ভাইকে সাগরে ফেলে দেওয়ার আজ তিন দিন অতিক্রম করতে চললেও এখনো উদ্ধার করতে পারেনি আমার ভাই রাম দাসকে। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা ও দায়সারাভাবে করছে। সাগরে এরকম কোন লোক নিখোঁজ হলে সাথে সাথে সরকারিভাবে ফায়ার সার্ভিস, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলসহ একাধিক টিম কাজ করে উদ্ধার অভিযানে। দুঃখের বিষয় আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে এখনো কুমিরা নৌ পুলিশ ছাড়া কোন উদ্ধারকারী দল দেখি নাই। আমরা গরিব বলে প্রশাসন নিশ্চুপ। এসব লোক দেখানো উদ্ধার অভিযানে আমার ভাই উদ্ধার হবে কিনা সন্দেহ। তবে স্থানীয় লোকজন আমরাসহ প্রতিদিন সাগর উপক‚লে বিভিন্নভাবে উদ্ধার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয়রা ৬ আসামিকে ধরে দিয়েছে, আমার বৌদি কনিকা জলদাস মামলা করেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাদেরকেও একবারের জন্য গ্রামে আর আনে নি। এখন শুনেছি কোর্টে চালান দিয়েছে। আমি আমার ভাইকে খুঁজে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
অপরদিকে রাম জলদাস উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিরা নৌ পুলিশের ইনচার্জ মোঃ ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন,ফায়ার সার্ভিস অথবা ডুবুরি দল দিয়ে উদ্ধার না করলেও আমরা রাম জলদাসকে উদ্ধার করতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। সীতাকুন্ড থানায় মামলা পরবর্তী আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।
তবে এসব বিষয়ে জানতে সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মজিবর রহমানকে ফোন করলে, উনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রশাসনের কোন অনুমতি না নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল বালু খেকোরা। কিন্তু গত সোমবার দুপুরের দিকে সেখানে বিপত্তি বাধে জেলেদের নিয়ে। অবৈধ বালু খেকোদের কারণে জেলেদের সাগর থেকে মাছ ধরা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বিষয়টা নিয়ে অবৈধ বালু খেকোদের বাধা প্রদান করলে জেলেদের উপর আক্রমণ করে বালু উত্তোলনকারীরা। এক জেলেকে ধরে সাগরে ফেলে দেয় বালু উত্তোলনকারীরা। একই সাথে অপর এক জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে হাতিয়া থেকে অপহৃত জেলেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিন দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে সাগরে ফেলে দেওয়া জেলে রাম জলদাস।