সাগরে লঘুচাপের আভাস রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ বা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটা লঘুচাপ তৈরি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যা পরবর্তীতে ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর সেটি ঘূর্ণিঝড়েও রূপ নিতে পারে।
সাধারণত মে ও জুন মাসে বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে থাকে। এ বছরও এ মাসেই ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর – পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ আজ বা কালকের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এ সংক্রান্ত এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরে এটি ঘণীভূত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বাংলাকে বলেন, বুধবারের (আজ) মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটা লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। যা পরবর্তীতে ঘনীভুত হয়ে নিম্নচাপে এবং পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
বর্তমান যে প্রেডিকশন তাতে দেখা যাচ্ছে এটা বাংলাদেশ, মিয়ানমার বা ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, উড়িশ্যা এই অঞ্চলের দিকেই এর গতিপথ। তবে এর গতিপথ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হচ্ছে। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসির।
আজ লঘু চাপ তৈরি হলে, কাল বা পরশুর মধ্যে তা নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে শুক্রবার রাতে বা শনিবার সকালের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানান ওমর ফারুক।
ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কোন সতর্কতা দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, লঘুচাপ তৈরি হওয়ার পরে ওয়ার্নিং দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে, কোন এলাকায় এটি আঘাত হানতে পারে এমন প্রশ্নে ওমর ফারুক জানালেন, প্রতিনিয়ত এটার গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে, রাতে একটা গতিপথ থাকছে আবার সকালে আরেকটা হচ্ছে। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত না লঘুচাপ তৈরি হয়ে সেটা নিম্নচাপে রূপ নেয় ততক্ষণ পর্যন্ত তার আগের সব গতিপথ পরিবর্তন হবে। যখন নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে তখন গতিপথ স্থির হবে। তখন স্পষ্টভাবে বলা যাবে, এটা কোন এলাকায় বা স্থানে আঘাত হানতে পারে। এখন পর্যন্ত পাওয়া সব ধরনের অবস্থা বিবেচনা করে আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস বলছে, লঘুচাপ তৈরি হওয়ার পর অন্তত তিনটি ধাপের প্রতিটি পার হয়ে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে এ সপ্তাহের শেষেই আঘাত হানতে পারে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার বুলেটিনে বলা হয়, ঢাকা, নেত্রকোণা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ফেনী, কক্সবাজার, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গাসহ সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বিস্তার লাভ করতে পারে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণপশ্চিম ও আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। এর প্রভাবেই ফের তাপমাত্রা বাড়ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, যখন সাগরে কোনো লঘুচাপ তৈরি হয়, তখন বৃষ্টির প্রবণতাটা কমে আসে। এখন যেহেতু বৃষ্টি কমে গেছে, তাই তাপমাত্রাটা বাড়তেছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে ওঠার সম্ভাবনা নাই। ২৪/২৫ মে’র দিকে তাপমাত্রা নেমে আসবে বলে জানান তিনি।
লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে ধাপে ধাপে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড় হলে এর নাম হবে রেমাল। কোথায় আঘাত হানতে পারে তা স্পেসিফিক বলা যাচ্ছে না, নিম্নচাপ হওয়ার পর বলা যাবে- কোনদিকে যাবে।
আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। ‘রেমাল’ নামটি প্রস্তাব করেছে ওমান। আরবিতে এর অর্থ বালি।