সাইবার অপরাধ এর বিরুদ্ধে লড়াই নতুন আইন কি যথেষ্ট কার্যকর!

4

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির ফলে বর্তমানে সাইবার স্পেসে অপরাধ এর পরিমাণ অতিমাত্রায় বেড়ে চলেছে এবং প্রতিনিয়ত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে সাইবার স্পেসে সংঘটিত এই অপরাধ আধুনিক যুগে একটি নীরব আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এই অপরাধগুলো মূলত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি অর্থনৈতিক প্রতারণা, সাইবার বুলিং, হ্যাকিং, ডিজিটাল হুমকির মাধ্যমে সংঘটিত হয়। এর প্রভাব এ একজন ব্যক্তির মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটতে পারে এবং যা একজন ব্যক্তিকে আত্মহত্যা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। সাইবার অপরাধ এ শিকারী ব্যক্তি দীর্ঘমেয়াদী ট্রমার সম্মুখীন হতে পারে, ফলপ্রসূ বর্তমান এ কিশোর কিশোরী এবং নারীরা এই অপরাধ এর অন্যতম ভুক্তভোগী। এই অপরাধগুলোর প্রবণতা মোকাবিলায় বিগত সরকার ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’ বাতিল করে এবং ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪’ চূড়ান্ত করে। তবে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’ এর‌বিভিন্ন ধারায় এই অপরাধগুলোর আওতায় শাস্তির বিধান আছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ধারা হলো: ২৫, ২৩,৩০ যেই ধারায় মিথ্যা ভীতি প্রদর্শন এর মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ হ্যাকিং, ডিজিটাল জালিয়াতি, এবং ব্ল্যাকমেইলিং বা অনলাইন হুমকি এর অপরাধ এ শাস্তি হিসেবে কারাদন্ড এবং জরিমানা এর বিধান আছে। তবে সাইবার নিরাপত্তা আইন এর ধারা ২৫ এর সঙ্গে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ধারা ২৫ এর ভাষাগত পার্থক্য আছে কিন্তু মর্মাগত‌ তেমন পার্থক্য নেই। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্ল্যাকমেইলিং এর বিষয়টি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া নারী শিশুর সুরক্ষার বিষয়ে এ ধারায় সাইবার বুলিং কে‌ অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এমনটি ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী অজামিনযোগ্য মামলার ধারা হিসেবে ১৪, ১৬, ২০, ২২ ধারা যা মূলত কম্পিউটার সিস্টেম ক্ষতিসাধন সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ দন্ড হ্যাকিং এর অন্তর্ভুক্ত। সাইবার অপরাধ দমন এ প্রতিরোধ হিসেবে ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা প্রদান তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। পরিশেষে বলা যায়, নতুন প্রস্তাবিত আইন‌‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪’ কিছু ধারা সংশোধন করা হয়েছে এবং নতুন কিছু সংযুক্ত করা হয়েছে তবুও এখনো কিছু প্রশ্ন সমালোচনার সম্মুখীন।
সাদিয়া ইসলাম চৌধুরী
এলএলবি (অনার্স), ৪র্থ বর্ষ, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম