সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

1

বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম যখন স্থিতিশীল ও নিম্নমুখী সেখানে বাংলাদেশে ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন ভোজ্য তেলের আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ, স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়েও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে এক লাফে ১৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। ভোজ্য তেলের কর অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন ১ এপ্রিল থেকে এই দাম কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন মিলারদের এই দাবিকে স্বীকার করে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা মেনে নেয়। নতুন দাম ঘোষণায় বাণিজ্য উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক বাজার ও ট্যারিফ কমিশনের ফর্মুলার ভিত্তিতে সয়াবিন তেলের দাম পুনঃনির্ধারণ করার কথা বলা হলেও বেশ কয়েক মাস ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম স্থিতিশীল ও নিম্নমুখি থাকলেও সরকারকে বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করে দাম নির্ধারণে ব্যবসায়ীরা সঠিক তথ্য প্রদান করেনি বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন।
গতকাল ১৬ এপ্রিল সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণে শুভংকরে ফাঁকি উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা সরকারকে ভুল তথ্য পরিবেশন করে নিজেদের স্বার্থে বিগত রমজান মাসে দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়ে বাজারে তেল উধাও করে দিয়েছিলেন তা আদায় করে নিলেন বলে বিবৃতিতে দাবি করেন। অধিকন্তু আমদানি কর হ্রাস ও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, যে সময়ে এই সুবিধা প্রদান করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাসে ৫৫০ কোটি টাকা করে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছিলো, ভোক্তারা তার এক টাকার সুফলও পায় নাই। পুরো টাকাটাই মিলাররা নিজেরা পকেটস্থ করে অধিক দামে সয়াবিন তেল কিনতে বাধ্য করেছেন। আর এ জন্য সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থার গ্রহণ বা তিরস্কার পর্যন্ত করে নাই, যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। আর এর কারণে ব্যবসায়ীরা একবার সয়াবিন, একবারে পেঁয়াজ, একবার চিনি, এভাবে পুরো বছরজুড়েই কোন না কোন পণ্যের কৃত্রিম সংকট জিয়িয়ে রেখে মানুষের পকেট কাটছে আর সরকার নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
বিবৃতিতে ক্যাব সহ-সভাপতি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর জন্য বারবারই অনৈতিক কৌশল অবলম্বন করেন। দাম বাড়ানোর চক্রান্ত হলেই তারা সরবরাহ বন্ধ করে দেন। আর বেশি দাম দিলে সয়াবিন পাওয়া যায়। সরকারের সাথে আলোচনার আগেই ব্যবসায়ীরাই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন, সরকারকে চাপে ফেলে সেই দাবি তারা পূরণ করে সরকার শুধু বৈধতা দেয় মাত্র। বিবৃতিতে আরও বলেন, সয়াবিনের দাম বাড়লেও তার প্রভাব পরিবারে খুব বেশি পড়বে না বলে বাণিজ্য উপদেষ্টা যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে তিনি বলেন, সয়াবিন তেলে ৭০ টাকা বেশি লাগলেও একইভাবে চাল, পেঁয়াজ, ডিম ও সবজির দরও সবজি ও অন্যান্য পণ্যে যদি এভাবে বাড়তি টাকা লাগে তাহলে, পরিবারের খরচের লাগাম টানবে কিভাবে? আর বাড়তি টাকা যোগাতে অক্ষম হলে পরিনতি অবশ্যই খারাপ যা খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে আরেক দফা উসকে দিবে। খবর বিজ্ঞপ্তির