আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী
মাহে রমজানের সমাপনী রাত মুমিন মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র রাত। এ রাতে প্রত্যেক রোজাদারকে আল্লাহ সিয়াম-সাধনার পুরস্কার দেবেন। তাই প্রত্যেক রোজাদারের উচিৎ আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানানো, যাতে রমজান মাসের ইবাদত বন্দেগি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘আমার উম্মতের ক্ষমা রমজানের শেষ রাতে হয়। আরজ করা হলো, হে আল্লাহর রসূল। তা কি শবে কদর? হুজুর বলেছেন না। কিন্তু মজদুর তো মজদুরি পায় তখনই, যখন সে কাজ শেষ করে নেয়।’ (আল হাদীস)। অর্থাৎ ২৯ বা ৩০ রমজানের রাতে ফেরেশতাদের মাঝে রোজাদারদের ক্ষমার ঘোষণা হয়ে যায়। তাদের রোজাগুলো, তারাবিহ, ইতিকাফ এবং শবে কদরের এবাদতগুলো কবুল করা হয়েছে, তাদের ক্ষমার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। প্রত্যেক রোজাদারের উচিৎ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত তাকওয়ার গুণাবলী পরবর্তী জীবনে বিশুদ্ধভাবে চর্চা করা। তবেই রোজার সার্থকতা।
পবিত্র মাহে রমজানের পর মুসলিম উম্মাহ্র দ্বারে সমাগত পবিত্র ঈদ। শাওয়াল মাসের চাঁদ উদয়ের সাথে সাথে ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলের মনে আনন্দের ঝিলিক দেখা দেয়। আমাদের জাতীয় কবির অমর সৃষ্টি কবিতার ছত্র প্রত্যেকের মুখে মুখে- ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ, তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানি তাগিদ।’ পবিত্র ঈদের প্রাক্কালে মুসলিম উম্মার আত্মসমালোচনা করা উচিত। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত প্রশিক্ষণ নিজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুশীলন ও চর্চার মাধ্যমে নবজাগরণের সূচনা করা। রমজান মাসে বিশ্ব মুসলিম কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করেছে একই নিয়মে একই সময়ে একই কাতারে। পবিত্র ঈদ উৎসবে শামিল হবে একই সময়ে। একে অপরের সাথে ছোট-বড়, ধনী-গরীব, দোস্ত-দুশমন, সবাই মিলে মিশে একাকার। সমস্ত ভেদাভেদ, মনোমলিন্য, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে পরমাত্মীয়ের মতো কোলাকুলি করে থাকে। এতে সৃষ্টি হয় মহা মিলনের এক অপূর্ব আনন্দঘন মুহূর্ত। সকলের মাঝে জন্ম নেয় মমতা, সৌহর্দ্য সম্প্রীতি। এ মহামিলনের প্রতীক স¤প্রীতি ও একতার বন্ধনকে যদি স্থায়ী রাখা যায় তবেই ঈদের সার্থকতা। ঈদ মোবারক।