সমুদ্র সৈকত ৮ মাঝিমাল্লা নিখোঁজ

1

কক্সবাজার প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত উত্তাল রয়েছে। বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস। অনেক মাছ ধরার ট্রলার ক‚লে ফেরেনি বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। এখন পর্যন্ত ৮ জন মাঝিমাল্লা নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদিকে বৃষ্টি বাতাসের মধ্যে সৈকতে ঘুরছে কিছু সংখ্যক পর্যটক। তারা বৈরী আবহাওয়ার প্লে ভার নিতে ছোটাছুটি করছেন সৈকতে। অনেক পর্যটককে সৈকতে নেমে স্নান করতেও দেখা গেছে। এদিকে হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ায় বিপত্তিতে পড়েছেন সৈকতের ফটোগ্রাফার থেকে কিটকট, জেড স্কী, বিচ বাইক চালক ও ঘোড়াওয়ালারা। অন্যান্য দিনের মতো আশানুরূপ পর্যটক না থাকায় তাদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বৈরী আবহাওয়ার পরও সৈকতের লাবনী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে ঘোড়া নিয়ে এসেছেন সৈয়দ নুর, আজিম, খলিল ও আমিন। ৪ জনের চোখে মুখেই হতাশা।
সৈয়দ নুর বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮ টায় সৈকতে ঘোড়া নিয়ে আসি। সারাদিন ঘোড়া পিঠে পর্যটকদের উঠিয়ে ছবি তোলা কিংবা চড়াই। তার বিনিময়ে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা কিংবা দেড় হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু আজকে সকাল ৮ টায় এসেছি, কিছু পর্যটকও আছে। কিন্তু কেউ ঘোড়াতে চড়েনি বৈরী আবহাওয়ার কারণে। কোনো আয় রোজগারও হয়নি। কীভাবে খালি হাতে ঘরে যাব বুঝতে পারছি না।ঘোড়াওয়ালাদের পাশেই অবস্থান করছিল ফটোগ্রাফার নয়ন। তিনি বলেন, এক টাকাও আয় হয়নি আজকে। যেহেতু সাগরের উচ্চ জোয়ার। বালিয়াড়ির যেখানে বিচ বাইক চালানো হতো সেখানে পানি। এখনো শূন্য হাতে বসে আছি।
সাগরের পাড়ে আর একটু হাঁটতেই দেখা হয় ঝাল মুড়ি বিক্রেতা মো. নজরুল ইসলাম ও মো. সবুজের সঙ্গে। তারা জানান, সকালে সাড়ে ৮ টায় ব্যবসা করতে এসেছেন। এখন দুপুর সাড়ে ১২টা বাজে। কিন্তু এখনো এক টাকার ঝাল মুড়িও বিক্রি করতে পারেননি।
সবার মতো একই অবস্থা জেড স্কী, ফটোগ্রাফার, চটপটি বিক্রেতা কিংবা শামুক-ঝিনুক বিক্রেতাদের। লাবনী পয়েন্টের বীচ বাইকার শাওন বলেন, দুপুর পর্যন্ত সৈকত পর্যটকদের ছড়িয়ে ১ হাজার টাকা আয় হতো। সেখানে আজকে বেকার বসে আছি। অন্যান্য বীচ বাইকারদেরও একই অবস্থা বলে জানান তিনি।
সাগরের পানি থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে জেড স্কী। এই জেড স্কী চালক ফরমান বলেন, সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ। যার কারণে জেড স্কী উপক‚লে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যবসা এক প্রকার বন্ধ। কিটকট ব্যবসায়ী রানা বলেন, লাবনী থেকে সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েকশ কিটকট বালুচর থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি। এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ রয়েছে শামুক-ঝিনুকের দোকানগুলোও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। যার কারণে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। একই অবস্থা সৈকত পাড়ের চটপটি দোকানদারদেরও। আনন্দ চটপটির পরিচালক হৃদয় বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দোকান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কারণ বালু উড়ছে, যার কারণে দোকান খোলা যাচ্ছে না।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে সহস্রাধিক দোকানপাট রয়েছে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া কারণে এক প্রকার বন্ধ রয়েছে সব ব্যবসা।