‘সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। আর এই সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি গবেষণা’। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘সিভাসু ফিশ ফেস্টিভ্যাল-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশন (বিএসএফএফ)-এর সহযোগিতায় সিভাসু’র মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে। সিভাসু অডিটোরিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, সিভাসু’র কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. কামাল এবং বিএসএফএফ-এর নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে বক্তব্য রাখেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ওশান রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রফেসর শিন-ইচি ইতো।
অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ আল নাহিদ। ফ্যাস্টিভ্যালে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মো. আব্দুল ওহাব।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশটা প্রাচুর্যে ভরা। আমাদের সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। কিন্তু আমরা এই সম্পদগুলোকে কাজে লাগাতে পারছি না। সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে’। দেশের মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নে সিভাসু’র এই ধরনের আয়োজন কার্যকরী ভ‚মিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কলাবরেশনের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক দক্ষতাবৃিদ্ধ, ভালো পেশাগত জ্ঞান এবং কর্মসংস্থানের আরো বেশী সুযোগ পেয়ে থাকে।
সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎপুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সি-ফুড বা সামুদ্রিক খাবারের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু আমরা সি-ফুডের এই চাহিদা মেটাতে পারছি না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশ এক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। মৎস্য খাত এবং অ্যাকোয়াকালচার নিয়ে কাজ করার আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে স্থাপিত বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানসমূহ এসব স্টলে তাদের পণ্য, সেবা ও উদ্ভাবন প্রদর্শন করে এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী চাকরিপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী ফেস্টিভ্যালে ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মৎস্য সেক্টরের সাথে জড়িত ৯৫টি প্রতিষ্ঠানের ৫৫০ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, উদ্যোক্তা, ভোক্তা এবং প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন। দুই দিনের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতে বিজ্ঞানীরা ৩৫০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। বিজ্ঞপ্তি