হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
হাটহাজারীতে গতকাল শুক্রবার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এছাড়া একই দিন তিনি রাঙ্গুনিয়ায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
গতকাল দুপুরে হাটহাজারী পৌরসভার কড়িয়ার দীঘির পাড় এলাকায় মডেল মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মসজিদের মাধ্যমে আমরা সমাজে নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুন্নতের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে চাই এবং বেদাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে চাই। যত বেশি মসজিদ হবে, মানুষ তত বেশি নামাজি হবে এবং নামাজির সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। আমরা মসজিদ করে দিচ্ছি, আপনাদের দায়িত্ব হলো মসজিদকে আবাদ রাখা। এই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ইসলামের সঠিক জ্ঞানের বাতিঘর। ধর্মীয় ও সামাজিক উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাসেমী, মুফতি ও মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আব্দুল আওউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. আব্দুস সালাম খান, প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল আলম, উপ-প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. ফেরদৌস, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান, হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ, হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া, ওসি আবু কাওসার মোহাম্মদ হোসেন এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদসহ স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস আল্লামা শেখ আহমদ।
প্রায় ১১ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিন তলা বিশিষ্ট এই মডেল মসজিদ কমপ্লেক্সে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের জন্যও নামাজের পৃথক ব্যবস্থা, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম ও খতিবদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা, সম্মেলন কক্ষ, হিফজখানা, লাশ ধোয়ার ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং এবং ইসলামি গবেষণা কেন্দ্রসহ নানা সুবিধা থাকবে।
এদিকে গতকাল বিকালে তিনি রাঙ্গুনিয়ায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। পরে মসজিদের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি জানান, ৪৩ শতক জমির উপর ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই মসজিদে একসাথে ১২০০ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। ১৩টি গাড়ি একসাথে পার্কিং করে রাখার সুবিধা রয়েছে। এরকম মসজিদ বিদেশে আছে, দেশে মডেল মসজিদ ছাড়া আর কোথাও নেই। যেখানে মাল্টিপারপাস ওয়ার্ক হবে। কোন মানুষ মারা গেলে এখানে আধুনিক মানের গোসলের ব্যবস্থা, অক্ষমদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা, হেফজখানা, কিচেন ও ডাইনিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। দেড় থেকে দুইশ মানুষের সেমিনার করার জন্য এসি কনফারেন্স কক্ষ, ইসলামিক রিচার্জ সেন্টার, হজ বুকিং ব্যবস্থা, লাইব্রেরি, মেহমান খানায় বিশিষ্টজনদের থাকার ব্যবস্থাসহ নানা সুবিধা রয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই মসজিদের মাধ্যমে এলাকার অপরাধ প্রবণতা কমবে।
উদ্বোধনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
মসজিদটি নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন। নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।