দিনভর বন্ধ থাকার পর গতকাল রবিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি সেবা দেওয়া শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। তবে বহির্বিভাগে সেবা আপাতত বন্ধ থাকবে। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের নেতা বলেছেন, আগামী সাত দিন সারাদেশেই হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তা নিয়ে চিকিৎসকদের উদ্বেগের মধ্যে রাত সোয়া ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের ভেতরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বিজিবি সদস্যরা মোতায়েন আছেন হাসপাতালে বাইরেও।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান রোববার রাতে বলেন, রাত ৮টার দিকে জরুরি বিভাগে ফিরেছেন চিকিৎসকরা। তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে আমাদের হাসপাতালের ইমার্জেন্সি সার্ভিসগুলো চালু হয়েছে। ইমার্জেন্সি ক্যাজুয়ালিটি, নিউরো সার্জারি এগুলো হচ্ছে আমাদের ইমার্জেন্সি সার্ভিস। এছাড়া এইচডিইউ, আইসিইউ, ইনডোরে যারা এরই মধ্যে ভর্তি আছেন; জরুরি অপারেশন, সিসিইউ এসব সার্ভিস চালু হয়ে গেছে। পাশাপাশি জরুরি বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক্সরে, সিটিস্ক্যানও চালু হয়েছে। বহির্বিভাগে রোগী দেখা আপাতত বন্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি। খবর বিডিনিউজ’র
দুর্ঘটনায় আহত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এবং কিডনি রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধর এবং একটি ওয়ার্ডে ঢুকে দুটি পক্ষের মারামারির ঘটনায় রোববার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
তাদের এই কর্মসূচিতে অন্য চিকিৎসকরা সংহতি জানানোয় রবিবার সকাল থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে সেবা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনরা।
দুপুরে তিন দফা দাবিতে সারাদেশের হাসপাতালগুলোয় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা। সে সময় সচিবালয়ে এক সভায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম।
পরে বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। ওই বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারী আবুল হাসনাত এবং সারজিস আলমও উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাখানেক ধরে চলা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, চিকিৎসকরা কর্মবিরতি স্থগিত করতে রাজি হয়েছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনটা দাবি তাদের, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন, চিকিৎসা সুরক্ষা আইন করতে হবে। তাদের দাবি শুনেছি, কথা বলেছি। আক্রমণকারীদের কালকের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। বাকি দাবিগুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। এরপর তারা আপাতত কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। তবে উপদেষ্টার বক্তব্যের সময়ই পেছন থেকে হট্টগোল শুরু করেন চিকিৎসকরা।