পূর্বদেশ ডেস্ক
তের বছর আগে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। গতকাল রোববার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, এই আলোচনা থেকে যেটা সুস্পষ্ট হলো- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে হবে, শক্তিশালী করতে- বিশেষ করে আর্থিক স্বাধীনতা দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে সরকারের অধীনে আরেকটা সরকার হতে হবে- এমনভাবে তারা শক্তিশালী হবে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল রোববার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম বলেন, অতীতের নির্বাচন কমিশনগুলো যে কলঙ্কজনক নির্বাচন করেছে বা পাতানো নির্বাচন করেছে- এটা করার মাধ্যমে তারা শপথ ভঙ্গ করেছে, সংবিধান ভঙ্গ করেছে; এইজন্য তাদের বিচারের আওতায় আনার কথা সবাই বলেছে। আজকে যারা এসেছেন তারা অনেক অভিজ্ঞ গবেষক। আমরা তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের যারা এসেছে, তারা সবাই ‘না’ ভোটের বিধান চালু করার কথা বলেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানিয়েছে। রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে দেশে গণতন্ত্র আসবে না।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির পদকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিকরা প্রথমবারের মতো ‘না ভোট’ দেয়ার সুযোগ পায়। ওই নির্বাচনে মোট ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯২৪ জন ‘না’ ভোট দিয়েছিলেন। ‘না’ ভোটের এই পরিমাণ ছিল বাক্সে পড়া মোট ভোটের শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ। তখন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৪০(ক) ধারায় বলা ছিল, যদি ‘না ভোট’ সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থীর ভোটকে ছাড়িয়ে যায়; সেক্ষেত্রে নতুন করে নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হলে তাতে ‘না’ ভোটের বিধান বাদ পড়ে।
সংসদে সংরক্ষিত আসন প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটে ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন এবং নারীর জন্য সরাসরি আসন থাকতে হবে ও প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা যে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির কথা বলেছি- সেটা হতে পারে।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রশ্নে সরাসরি নির্বাচনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির দাবি জানিয়ে আসছে সুজন। এ পদ্ধতিতে এক তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য পদ নারীদের জন্য সংরক্ষণের কথা বলা হচ্ছে, যেখানে সরাসরি ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন কেবল নারী প্রার্থীরা। সেজন্য লটারি করে প্রথমবার একশ আসন সংরক্ষণ করার দাবি বেসরকারি সংগঠনটির। অন্য ২০০ আসনে নারী-পুরুষসহ সবরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগদানে কথা বলা হচ্ছে। এসব আসন পালা করে সংরক্ষিত হিসেবে থাকবে পরের দুই নির্বাচনে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য আবদুল আলীম, জেসমিন টুলী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সভায় অংশ নেন।