সবজির দাম কমলেও আলু-পেঁয়াজে অস্বস্তি

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর বাজারগুলোতে কমছে সবজি, ডিম ও মুরগির দাম। তবে আলু আর পেঁয়াজ সংসারে বেশি প্রয়োজনীয় হলেও, এ দুই পণ্যের দাম কমার কোন লক্ষণ চোখে পড়ছে না। গতকাল শুক্রবার নগরীর বাজার ঘুরে এ বিষয়টি চোখে পড়ে।
বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে, যা গত মাসে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ছিল। আর ১১০ থেকে ১২০ টাকার দেশি পেঁয়াজের দাম উঠেছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। তবে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ১২০ টাকার মধ্যে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আলু, পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক দামকে খুব অস্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন।
রায়হান নামে এক ক্রেত বলেন, ‘আলুর দাম কেজি ৭৫ টাকা, ৫ কেজির বেশি নিলে ৭০ টাকা পর্যন্ত রাখবে বলছে দোকানি। এটা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না। একই অবস্থা পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও। কিন্তু দুটি পণ্য এতটাই প্রয়োজনীয় যে বাজারে এলে কিনতেই হয়। বিকল্প কিছু নেই। মাসে পরিবারের যদি পাঁচ কেজি আলু আর পাঁচ কেজি পেঁয়াজ লাগে- এ জন্যই ব্যয় করতে হবে এক হাজার টাকা। এটা কি স্বাভাবিক কথা!’
আলু পেঁয়াজের বিষয়ে রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সেলিম মিন্টু বলছেন, আলু-পেঁয়াজের মৌসুম এখন শেষের দিকে। প্রতি বছর এ সময়ে দাম বাড়ে। তবে এ বছর শুরু থেকে দাম চড়া। এরপর এখন বেড়ে আরও বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে।
বাজারে সবজির দাম অনেকটা কমেছে গত মাসের তুলনায়। এরমধ্যে ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। এছাড়া বেগুন, বরবটি, করলা ও কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ও পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এসব সবজির দাম ১০০ টাকার ওপরে ছিল। অপরদিকে, ফুলকপি ৫০ টাকা থেকে কমে ৩০ টাকা এবং লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় নেমেছে। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দেশি এবং সিলেটি ছোটা ২০০ টাকা কেজি দরে।
সবজি বিক্রেতা শাহেদ হোসেন বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। আগামীতে দাম আরও কমে আসবে। তাছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের দাম না বাড়লেও খোলা তেলের দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ থেকে ১৭১ টাকায় উঠেছে। যেখানে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ থেকে ১৭২ টাকা। যদিও তা উল্টো হওয়ার কথা। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেল ১৬২ থেকে ১৬৩ টাকা ও সুপার পাম তেল ১৬৪ থেকে ১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমছে গত সপ্তাহ থেকে। এখন প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা উঠেছিল। সোনালি মুরগির দাম ৩১০-৩২০ টাকা প্রতিকেজি। এছাড়া বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আবার অপরিবর্তিত থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের মত বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা এবং কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি পাবদা ৩৫০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, সরপুঁটি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, রুপচাঁদা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, চিতল ৪০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, চাপিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।