সন্ধ্যা হলেই বেপরোয়া চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি ও মাদক কারবার

1

কর্ণফুলী প্রতিনিধি

বর্তমানে বিভিন্ন কারণে সামাজিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ‘কিশোর গ্যাং একটি আতঙ্কের নাম। চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ভয়ংকর রূপধারণ করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা, তাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ প্রায় এ উপজেলার বাসিন্দারা, চুরি, ছিনতাই, মারামারি, ডাকাতি, ভ‚মি দখল, জুয়া খেলা, মাদক বিক্রি, মাদকসেবন সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এদের নেতৃত্বে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ সহ একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা হতে না হতেই দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কয়েকটি গ্রæপে সংঘবদ্ধ হয়ে উপজেলার চলরক্ষ্যা, চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ঘোরাফেরা করে। সামান্য কথা কাটাকাটি হলেই তারা দেশীয় অস্ত্রসহ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ছে। পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধে জড়াচ্ছে। এতে এলাকার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে কর্ণফুলী আনোয়ারা সংযোগ পিএবি সড়কে রাত হলেই চলে তাদের রাজত্ব, সিএনজি অটোরিক্সার যাত্রীদেরকে টার্গেট করে মাঝপথেই যাত্রীদের চুরি ধরে নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার সহ ছিনিয়ে নেই মূল্যবান জিনিসপত্র। পিএবি সড়কের প্রতিদিনের দৃশ্য এটি। কর্ণফুলী কিংবা আনোয়ারা থানায় প্রতিদিনি কেউ না কেউ এমন ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে হাজির ভুক্তভোগীরা। কিশোর গ্যাং নামটি যেন কর্ণফুলীর মানুষের কাছে এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠতে শুরু করছে।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বলছে, গত বছরের আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতিসহ রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ভাড়াটে হিসেবে তারা কাজ করছে। বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করছে পুলিশ। তবে জামিনে বের হয়ে ফের অপরাধ কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে তারা, এসব কিশোর-তরুণ পাড়া-মহল্লারই উঠতি বয়সী উগ্র বখাটে ছেলে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তাদেরকে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহার করছে। যার ফলে তারা ছোট কিংবা বড় সব ধরনের অপরাধের সাথে লিপ্ত হয়ে পড়ছে।
এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সামাজিকভাবে সতর্ক ও এগিয়ে আসতে হবে। তবে অতীতে বারবার কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক বাধা এসেছে। এবারও যেন পুলিশকে সে রকম কোন বাধার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে সতর্ক হতে হবে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ শরিফ দৈনিক পূর্বদেশকে জানান, আমরা সিএমপি পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনায় কিশোর গ্যাং এর বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি, আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেক আটক করতেছি যা আপনারা সকলেই অবগত আছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যাদের মানুষই হোক তাদের বিষয়ে কোনো আপোষ নেই। কর্ণফুলীতে কিশোর গ্যাং নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।