সত্য প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগই শাহাদাতে কারবালার দর্শন

0

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্লাজায় আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে ১০ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনে ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচকরা বলেছেন, সত্য ও মিথ্যা, হক ও বাতিলের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাত চিরন্তন। যুগে যুগে হকপন্থি মানুষের অস্তিত্ব যেমন আছে, তেমনি বাতিল-বিকৃত মতাদর্শীদের অস্তিত্বও যুগে যুগে বিদ্যমান। মিথ্যা বাতুলতা ও অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে দ্বীন কায়েমে ঝাঁপিয়ে পড়া এবং সত্য ন্যায় নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ প্রয়াস চালানোই হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও শাহাদাতে কারবালার অন্তর্নিহিত দর্শন ও শিক্ষা।
বক্তারা বলেন, ইয়াজিদ ছিল দুরাচারী শাসক। তার প্রতি জনসমর্থন ছিল না। গায়ের জোরে মসনদে বসে ইয়াজিদ গণবিরোধী স্বৈরশাসন চাপিয়ে দিয়েছিল। আর সত্য ও ইনসাফের প্রতীক হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ইয়াজিদি দুঃশাসন রুখে দিয়ে অসামান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
গতকাল মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।তিনি বলেন, আমরা যে আজ সুন্দর জীবন পেয়েছি তার উপযুক্ত আমরা নই। এটি আমাদের ওপর আল্লাহর দয়া। কখনও অহংকার ও হিংসা করা যাবে না। অহংকার ও হিংসা জীবনে বিপর্যয় ও পতন ডেকে আনে। জীবনে সাফল্য পেতে বিনয়ী হতে হবে। অবিরত দান করা, জিকির করা, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর হক আদায় করা, আল্লাহর দরবারে শোকর গোজারি করা, তওবা ও ইস্তিগফার করাই একজন মুমিনের করণীয়। এর মাধ্যমে দুনিয়ায় সফলতা এবং আখিরাতে নাজাত মিলবে।
সুফি মিজানুর রহমান বলেন, গরু সারাদিন ঘাস খায়। সকালে দেয় বিশুদ্ধ সর্বোত্তম খাদ্য দুধ। আর সাপ খায় দুধ অথচ দেয় বিষ। এটা খাদ্যের ব্যাপার নয়, জাতের ব্যাপার। জাতের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে আম গাছে আম ধরে। কাঁঠাল গাছে আম ধরে না। এটা জাতের ব্যাপার। খতিবে বাঙাল আল্লামা জালাল উদ্দিন আলকাদেরী (র.) শুধু সাধারণ আলেম ছিলেন না, আমলদার আশেকে রাসূল (দ) আলেমে দ্বীন ছিলেন। এই মহান ব্যক্তিত্ব শাহাদাতে কারবালা মাহফিল উপহার দিয়ে আমাদের জন্য মহা নিয়ামত দেয়ায় আমরা আজ দ্বীনের ওপর এবং হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পেরেছি।
মাহফিলে অতিথি ছিলেন আঞ্জুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু), পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর আলহাজ মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন চৌধুরী, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, ইছাপুর দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহজাদা সৈয়দ শফিউল আজম, সৈয়দ মাওলানা দস্তগির বারী, মাওলানা হাফেজ জানে আলম।
মাহফিলে কুরআন মজিদ থেকে তেলোয়াত করেন কারী মোসাদ্দেক মোরশেদ। নাতে রাসুল (দ) পেশ করেন শায়ের মনির উদ্দীন কাদেরী। মাহফিলে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান বলেন, মাযহাব মানা ফরজ। মাযহাব না মানলে ঈমানদার হওয়া যাবে না।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফলমÐি জামে মসজিদের খতীব মাওলানা ইউসুফ বাহার। ড. জাফর উল্লাহ ও হাফেজ ছালামত উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক ও পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর আলহাজ মুহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, আলহাজ খোরশেদুর রহমান, আলহাজ মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, আলহাজ পেয়ার মুহাম্মদ, প্রফেসর কামাল উদ্দীন আহমদ, হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক, মুফতি মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন, মুহাম্মদ সাইফুদ্দীন, আব্দুল হাই মাসুম, আলহাজ মুহাম্মদ দিলশাদ আহমেদ, জাফর আহমদ সাওদাগর, মুহাম্মদ মনসুর সিকদার, মাহবুবুল আলম, মুহাম্মদ মাইনুদ্দীন মিঠু, জহির উদ্দীন, শফিক আহমদ, মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, মুসা খান, মুহাম্মদ জাফর, মুহাম্মদ ফিরোজ, আব্দুর রহমান, ওসমান গণি, নাজিব আশরাফ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি