সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীরা বড় ধরনের জমায়েতের ঘোষণা দিলেও গতকাল মঙ্গলবার শখানেক মানুষের বিক্ষোভ হয়েছে সচিবালয়ে। বেলা ১১টার কিছু সময় পর মন্ত্রিপরিষদের নতুন ভবনের নিচে শুরু হওয়া সমাবেশ থেকে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।
সব মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক মিছিল নিয়ে এসে এদিন বাদামতলায় খোলা আকাশের নিচে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। খবর বিডিনিউজ’র
গত ২৫ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সেই থেকে এই আইনকে ‘নিবর্তনমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে।
এই অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় গঠিতি কমিটি ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। কর্মচারীদের সঙ্গে আরেক দফায় বৈঠক করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রস্তুত করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্য উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা কাউকে বিশ্বাস করতে চাই না। বিশেষ সুবিধা আমরা চাই না। অধ্যাদেশ বাতিল চাই এবং ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চাই।
“ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর যদি এখানে না থাকে, এই অধ্যাদেশের মাস্টারমাইন্ড কে? কে কার সুযোগ নিয়ে বসে আছে আমরা তালিকা করছি। আমরা এখন অধ্যাদেশ বাতিল ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চাই। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে।” কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “আমাদেরকে জনসমাগম আরও বাড়াতে হবে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের প্রতিটি দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো যায় কিনা সবাই চিন্তা করুণ।
“আইন উপদেষ্টার অনুপস্থিতিতে এই আইন হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেছেন এটা মন্দ আইন। তারপরেও এই আইন বাতিলে কালক্ষেপণ করার কারণ কী?”
তিনি বলেন, “আঙ্গুল সোজা আছে, আঙ্গুল বাঁকা না করলে কিছু হবে না। আমরা যমুনা ঘেরাও করতে যাব না। কারণ আমরা ওই ধরনের লোক না। মহার্ঘ ভাতা না দিয়ে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে যেটা ২৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা বলছি সর্বনিম্ন চার হাজার টাকা বাড়াতে হবে।
“আল্লাহর বিশেষ রহমতে উনারা সচিব হয়েছেন, উপদেষ্টা হয়েছেন। কিন্তু উনাদের বিবেক ভোঁতা। আইন মানি, তালগাছ আমার। তালগাছের গোড়া না থাকলে তালগাছ থাকে না। ভালো কথায় কাজ না হলে মন্দ করতে ১০ মিনিট সময় নেব।”
কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা গোলাম রব্বানি বলেন, “স্বৈরশাসকের রেখে যাওয়া কিছু প্রেতাত্মা সরকারের সঙ্গে আমাদেরকে মুখোমুখি করেছে। বেশ কিছু লোককে আমরা আইডেনটিফাই করেছি।
“অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় প্রধান উপদেষ্টার গঠন করে দেওয়া কমিটি একটি মিটিং করেছে। আমরা আশা করছিলাম সেই মিটিংয়ে আমাদের ডাকবে। কিন্তু তারা আমাদেরকে ডাকেনি। গণমাধ্যমে শুনেছি তারা সংশোধনের ব্যবস্থা করবে। আমরা সংশোধন মানি না। এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। সারা বাংলাদেশ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা বলছে এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে।”
এদিকে কর্মচারীদের বিক্ষোভের বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবিরকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন আইন উপদেষ্টা।