নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি ও রপ্তানির ৯০ শতাংশেরও বেশি বাণিজ্য পরিচালনা করে থাকে। এর প্রেক্ষিতে বন্দরের শক্তিশালী নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বন্দর সুবিধা নিরাপত্তা বিধি (আইএসপিএস কোড) অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে অগ্নি নির্বাপন, তেল নিঃসরণ প্রতিরোধ, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা মহড়া ও অনুশীলন পরিচালনা করে, যাতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার প্রস্তুতি, সমন্বয় এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা আরও জোরদার হয়।
নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় চলমান প্রতিশ্রæতির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা ও সংলগ্ন নদী অঞ্চলে ডিটিএম অফিসের সামনে একটি যৌথ (কম্বাইন্ড) অগ্নি নির্বাপন মহড়া পরিচালনা করে। মহড়াটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের নির্দেশনায় এবং কমোডর আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) এর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়, যাতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদন্ড অনুযায়ী কার্যকর সমন্বয় ও বাস্তব প্রস্তুতি নিশ্চিত করা যায়। মহড়ার প্রথম পর্যায়ে, খোলা আগুন থেকে রাসায়নিকবাহী একটি কন্টেইনারে অগ্নিকান্ডের অনুকল্পে ফায়ার ইউনিটগুলো দ্রুত পানি ও ফোম প্রয়োগের মাধ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, জেটিতে অবস্থানরত একটি জাহাজে অগ্নিকান্ডের অনুকল্পে মহড়া পরিচালিত হয়।
এতে অংশ নেয় পোর্ট ফায়ার সার্ভিস ইউনিট, বিএনএস ঈসা খানের ফায়ার টিম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পোর্ট ইউনিট এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের অগ্নি নির্বাপন সক্ষম টাগবোট। সকল ইউনিটের সমন্বিত প্রচেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। মহড়ায় অফিসার-ইন-চার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা-প্রশাসন) ও পিএফএসও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক (নিরাপত্তা-অপারেশন) মেজর আনিস-উজ-জামান, বিএনএস ঈসা খানের ফায়ার টিমের পক্ষ থেকে লে. ইয়াসমিন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পোর্ট ইউনিটের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোনেম বিল্লাহ এবং পোর্ট ফায়ার শাখার কর্মকর্তা খলিলুর রহমান। মহড়া শেষে কর্মকর্তারা অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান এবং বন্দর এলাকায় অগ্নি নিরাপত্তা, দ্রুত প্রতিক্রিয়া, ঝুঁকি মূল্যায়ন ও আন্তঃপ্রতিষ্ঠানিক সমন্বয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তারা বলেন সা¤প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি আমাদের সতর্ক করছে। প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও পারস্পরিক সমন্বয়ই বড় বিপর্যয় রোধের একমাত্র উপায়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, নিয়মিত এ ধরনের মহড়া আয়োজনের মাধ্যমে বন্দর এলাকার ফায়ার ইউনিটগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রæত সাড়া প্রদান এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আরও উন্নত হবে। পরে মহড়া আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।











