সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা ছোট পরিসরে না কি দীর্ঘ মেয়াদে সংস্কার চায়। সে অনুযায়ী নির্বাচন দেওয়া হবে।
বাসস লিখেছে, বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভ‚মি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্খা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’।
সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কি ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার চাইবে। যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না- আমাদের দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে’।
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয় বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।
তার সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে তুলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গতি ফিরে এসেছে।