সংকটের দ্রুত সমাধান জরুরি

1

দেশের অর্থনীতির মূল উৎস জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এর কর্মকর্তাদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সারা দেশের সকল প্রকার রাজস্ব সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ২৮ জুন শনিবার থেকে শুরু হওয়া এ কঠোর আন্দোলন রবিবারও অব্যাহত থাকে। এরমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা আন্দোলনকারীদের সাথে ৩০ জুন বৈঠকের কথা থাকলেও উভয় পক্ষের শর্তের মারপ্যাচে তা আদৌ হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে। এরমধ্যে রবিবার তড়িগড়ি করে সরকার রাজস্বসেবাকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করে আন্দোলনকারীদের উপর উল্টো ছাপ সৃষ্টি করার প্রয়াস চালিয়েছে। সরকারের এ ঘোষণায় আন্দোলনকারীদের আরো বেশি সংক্ষুব্ধ করছে বলে কোন কোন গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্দোলনের অনেকগুলো বিষয় যৌক্তিক মনে হলেও দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এনবিআরকে একেবারে শাটডাউনে নিয়ে যাওয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তবে সরকার শুরু থেকে নমনীয় হলে বর্তমান অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার কোন সুযোগ থাকতনা বলে মত দেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমান এনবিআর-এর যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে দেশের দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। এতে চরম শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা এমন ধারা চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারের তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এদিকে আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও ‘প্রতিহিংসামূলক বদলি’ বন্ধের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন। তবে, চলমান কর্মসূচি থেকে কেবল আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গত শনিবার দুপুরে ঘোষণা দেয়, ‘শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে। তবে তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তাঁদের শর্ত হলো, আলোচনার আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। অভিযোগ, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের চলমান সংস্কারে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপেক্ষা করছেন। উল্টো আন্দোলনকারীদের দমন-নিপীড়ন করা হচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ী নেতারা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করার আহŸান জানিয়ে বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিষœ ঘটানো যাবে না। ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এনবিআরের কলম বিরতি কর্মসূচির কারণে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সংকট নিরসনে সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতি এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখতে দ্রæত আলোচনার মাধ্যমে এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে হবে। ব্যবসায়ী নেতারা এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আলোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিডা) সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তারা।
কর্মকর্তাদের হঠাৎ করে বদলির অভিযোগও আনা হয় এনবিআর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তাঁদের শর্ত হলো, আলোচনার আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। বিক্ষুব্ধরা জানান, এই চেয়ারম্যান সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের একজন যার হাতে জুলাই চেতনার শহিদদের রক্তের দাগ রয়েছে। এদিকে গত শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রপ্তানিমুখী বিভিন্ন শিল্পখাতের ব্যবসায়ী নেতারা জানান, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতি কর্মসূচি গত ১৪ মে থেকে শুরু হলেও গত শনিবার থেকে তা পূর্ণাঙ্গ অচলাবস্থায় রূপ নিয়েছে, যা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ী নেতারা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করার আহŸান জানিয়েবলেছেন, কোনো অবস্থাতেই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো যাবে না। ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এনবিআরের কলম বিরতি কর্মসূচির কারণে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।ব্যবসায়ীরা সংকট নিরসনে সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতি এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখতে দ্রæত আলোচনার মাধ্যমে এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে হবে। ব্যবসায়ী নেতারা এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আলোচনায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিডা) সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন। আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতির চাকা বন্ধ করে আন্দোলন করলে এতে সর্বশেষ দেশেরই ক্ষতি হবে। আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতি সরকারের সুদৃষ্টিও আমরা কামনা করছি। এ সরকার জনগণের প্রত্যাশা লালন করে নিঃসন্দেহে। তারা জানেন দমনপীড়ন করে আন্দোলন দমানো যাবেনা। এক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ করে দেয়া সরকারের দায়িত্বে পড়ে। এছাড়া আন্দোলনকারীরা নানা শর্ত জুড়িয়ে দিয়ে আলোচনায় বসার কথা বললে তাও মেনে নেয়া যায়না। দুপক্ষই একটি যৌক্তিক উপায় বের করে সংকটের দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেবে-এমনটি প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।