নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ দুই দশক ধরে আত্মগোপনে থাকা জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হককে (৫১) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত রবিবার দিবাগত রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানার লালদিঘীরপাড় হোটেল সোনালীর সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আজিজুল হক রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের উত্তর হিঙ্গলা গ্রামের বাসিন্দা। ২২ বছর আগে রাউজানে বৌদ্ধ ভিক্ষু জ্ঞানজ্যোতিকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার আসামি তিনি।
র্যাব-৭ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হকের বিরুদ্ধে রাউজান থানায় হত্যা, অস্ত্র, অপহরণ, চুরি এবং ডাকাতির অভিযোগে ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ২০ বছরেরও বেশি সময় আত্মগোপনে থাকার কথা আজিজুল হক স্বীকার করেছেন। বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর এড়াতে জেলা এবং মহানগরীর বিভিন্নস্থানে আত্মগোপন করেছিলেন বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, রাউজানের বাসিন্দা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার পরিবারের ঘনিষ্ঠ আজিজুল হক। দুই যুগ আগে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। ২০০২ সালের ১১ এপ্রিল রাউজান উপজেলার হিঙ্গালা বৌদ্ধ আশ্রমের পরিচালক জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে তার কক্ষে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা দেশে-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। বৌদ্ধভিক্ষু খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অন্যতম আসামি আজিজুল হক। এই ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ২০০৪ সালে সেনাবাহিনীর পরিচালিত ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অল্পদিনের মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপর মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে যান। প্রায় ২০ বছর বিদেশে পালিয়ে ছিলেন তিনি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে আসেন তিনি। এলাকায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাউজানে ওমান প্রবাসী সিআইপি ইয়াসিন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দলের কেন্দ্রীয় ওই নেতাকে দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।