শীতের সবজিতেই স্বস্তি মাছ-মাংসে হিমশিম

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে, কমেছে দাম। শীতের শুরুতে দাম চড়া থাকলেও এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে সবজির দাম। সবজিতে স্বস্তি মিললেও অস্বস্তি রয়েছে মাছ ও মাংসের বাজারে। ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের মাছ-মাংস কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। ১৬০-১৭০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকায়। এছাড়া সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, লেয়ার ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, কক ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা ক্রেতা ইমাম হোসেন বলেন, ‘গরু-খাসির দাম বেশি। ব্রয়লার মুরগি যে খেতে যাবো, তার দামও বেড়েছে।’
গরুর মাংস কিনতে আসা আশরাফুল হক বলেন, ‘৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও ৭০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে মাংসের দাম।
গরুর মাংস বিক্রেতা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মাংসের দাম কম থাকলে আমাদের একটু বেশি কেনা-বেচা হয়। আর বাড়তি হলে আমাদের বেচাকেনা কমে যায়। ১ কেজির জায়গাতে আধা কেজি কেনে তখন। আমরাও চাই, মাংসের দাম কমুক।’
মুরগি বিক্রেতা আজিম উদ্দিন বলেন, ‘মুরগির খাবারের দাম বেশি হওয়ায় মুরগির দাম বেড়েছে। আর দাম কমার লক্ষণ দেখছি না। আমরা যেমন কিনি, তেমন বিক্রি করি।’ আরেক মুরগি বিক্রেতা আবদুন নুর বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তখন কিনেছি কিছুটা কমে। তবে বর্তমানে মুরগি বাজারে কম আসছে আর দামও বেশি। তাই এখন ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
অপরদিকে পাঙ্গাস মাছ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ফাইস্যা ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, গøাস কার্প ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, কাতলা ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, টেংরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, ইলিশ ছোট ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রিকশাচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মাছ-মাংস কেনার মতো না। আর ব্রয়লার মুরগি যে কিনবো তাও একটা ২ কেজির বেশি হয়। দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা লাগে। ছেলে-মেয়েদের ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারি না। যা আয় করি তা বাজারেই চলে যায়। পরিবারের অন্যান্য খরচ কীভাবে মেটাবো।’
মাছ বিক্রেতা শহীদ বলেন, ‘নগরীতে মাছের সরবরাহ বেশি হলে দাম কমবে। মাছের সরবরাহ কম, তাই দাম একটু বেশি।’
তবে স্বস্তি রয়েছে সবজির বাজারে। সরবরাহ বাড়ার কারণে কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, শালগম ১৫ থেকে ২০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, নতুন আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৩০ টাকা কেজি, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ টাকা।’
রিয়াজউদ্দিন বাজারে বাজার করতে আসা ফেরদৌসী আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, ‘শীতের সবজির দাম কম। আগে যেখানে ৫০০ টাকায় বাজারের ব্যাগ ভর্তি করা যেত না, সেখানে এখন ২০০ টাকার সবজি কিনলে আরও ব্যাগ ভরে যায়। তবে মাছ ও মাংসের দাম বেশি।’