ফয়েজুন্নেসা মিলি
শিশুর সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে শিশুর কাজের মাধ্যমে। যে শিশু আজ ভূমিষ্ঠ হল এ পৃথিবীতে সেও আনন্দ বার্তা নিয়ে আসে তার কর্মের মাধ্যমে। সে জানান দেয় আমি পৃথিবীতে এসেছি। শিক্ষক হল এই সৃষ্টিশীলতা বিকাশের কারিগর। শিশুর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধন হল শিক্ষকের প্রথম কাজ। এ বিকাশ সাধনে শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেন। কখনো গায়ক, কখনো নায়ক, কখনো নৃত্যশিল্পী আবার কখনো বাচিক শিল্পী। শিক্ষার্থী সঠিক পরিবেশ পেলে তার সঠিক বিকাশ ঘটবে মেধা ও সৃজনশীলতায়। একটা শিশুর বিকাশ স্তরের প্রথম ধাপের পাঠশালা হলো তার পরিবার। এই পরিবারের মা বাবার কাছেই সে প্রথম পাঠ গ্রহণ করে। এককথায় মা বাবার চোখেই প্রথম বিশ্ব দেখে। এর পরে দেখে শিক্ষকের চোখে। যিনি স্বপ্ন দেখানো কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন সবসময়। তাই শিশুকে স্বপ্ন দেখাতে হবে। স্বপ্নের মাঝেই বিকশিত হবে শিশুর সৃষ্টি শীলতা। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ৪স্তরে কাজ করে যেতে হবে।
পরিবার-শিক্ষক-সমাজ-দেশ। শিশুর শিখন পরিবেশ নিরাপদ হতে হবে। শিশু যে কোন সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে শিক্ষকের কাছে যেন নির্দ্বিধায় যেতে পারে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে শৈশব থেকেই।।তাই কোন শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষকে ভয় না পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষককে। শিক্ষককে হতে হবে সহযোগী বন্ধু। শিক্ষার্থীদের সাথে অত্যন্ত সচেতন ভাবেই আচরণ এবং ব্যবহার করতে হবে।
শিখনে থাকবে না কোন প্রতিবন্ধকতা। একটা শিশু বহুমাত্রিক ভাবে শিখে। সে পরিবেশ থেকে শেখে, কাজ করে শেখে, অনুসন্ধান করে শেখে,দেখে শেখে এবং ঠেকে শেখে। একট শিশু যখন বিদ্যলয়ে কলম বা পেন্সিল ফেলে আসে অন্য শিশু তখন সহযোগিতার হাত বাড়ায়।এই সহযোগিতায় সহায়তা করে শিক্ষক। বিদ্যালয় থেকেই শিশু সহযোগীতা, সহমর্মিতা ইত্যাদি শিখছে।একটা শিশু বিদ্যালয় থেকে শিখছে অনেক কিছু। যেমন- শৃংখলা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, সহযোগীতা, সহমর্মিতা, শ্রদ্ধাবোধ, পরমত সহিষ্ণুতা, ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন বর্তমানে জীবন দক্ষতার অনেক কিছু শেখে বিদ্যালয় থেকে। যা শিশুকে প্রতিক‚ল পরিবেশে টিকে থাকতে সহায়তা করবে। কোন শিশু শিক্ষার বহির্ভূত থাকবে না। তার পরিবেশ আমাদেরকেই সৃষ্টি করতে হবে। শিশুর সৃজনশীলতা আমাদের সম্পদ। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। দেহের বিকাশের ও পরিচর্যার জন্য যেমন পুষ্টি দরকার তেমনি শিশুর মেধা আর মননের বিকাশের জন্য সৃজন শক্তির ও পুষ্টির প্রয়োজন। আর পর্যাপ্ত পুষ্টি পেলেই শিশু সৃজনশীল হয়ে গড়ে উঠবে। সৃষ্টিশীল শিশু তৈরিতে শিক্ষকের সচেতনতা ও মনোযোগ দুই- ই আবশ্যক। সর্বোপরি শিক্ষকের আন্তরিকতাই শিশুর সৃজনশীলতা বিকাশের সহায়ক।
লেখক : সহকারী শিক্ষক- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়