‘শিল্পদূষণের শিকার কর্ণফুলী’

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্ণফুলী নদী মূলত শিল্পদ‚ষণের শিকার। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত কারখানাগুলোর ৯০ শতাংশের বর্জ্য শোধনাগার নেই। নগরীর দুই হাজার টন বর্জ্য নদীতে গিয়ে পড়ে। কর্ণফুলী নদীর মালিক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। নদী রক্ষায় কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয় না। তারা ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে দায়িত্ব শেষ করে।
গতকাল শিল্পদ‚ষণ থেকে নদী রক্ষায় করণীয় শীর্ষক গণশুনানিতে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মনজুরুল কিবরীয়া। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খানের পরিচালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরীয়া। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শফিক হায়দার চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক ও বেলার কর্মস‚চি প্রধান ফিরোজুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো জিয়াউদ্দিন বলেন, আমরা দখল দ‚ষণ প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে নালা-নদীকে মারছি। এ কারণে আমরা জলাবদ্ধতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রাকৃতিক কারণে এবং নিজেদের কারণে নদী ধ্বংস হচ্ছে। যতক্ষণ নদীকে বাঁচাতে না পারব, তত দিন জলাবদ্ধতা কমবে না। সরকারের পাশাপাশি আমাদের নিজেদেরও নদী রক্ষায় সচেতন হতে হবে।
চট্টগ্রামের খাল ও নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, কর্ণফুলী দখল করে ফিশারিঘাটে নতুন মাছবাজার হয়েছে। পুরোনো বাজার উচ্ছেদ করে সেখানকার বাসিন্দাদের রুটি-রুজি কেড়ে নেওয়া হয়। নতুন বাজারটি বন্ধ করতে আদালতের আদেশ রয়েছে। এটা উচ্ছেদ করে নদী দখলমুক্ত করতে হবে।
চাক্তাই খালপাড়ের বাসিন্দা পান্না দাস বলেন, ২০১৭ সালে চাক্তাই খালের পাশে মনোহরখালী মাছবাজার বন্ধ করে কর্ণফুলী নদী দখল করে নির্মাণ করা হয় একটি নতুন মাছবাজার নির্মাণ করে। সেখানে দোকান না পেয়ে আমার ভাই স্ট্রোক করে মারা যান। এখন আমরা চলতে পারি না। নদী দখলমুক্ত করে নতুন বাজার বন্ধ করা হোক। পুরোনো বাজার ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
শুনানিতে হালদাপাড়ের বাসিন্দা মুজিবুল হক বলেন, হালদার সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন খালে সুইচগেট (জলকপাট) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এগুলো কাজে আসছে না। এগুলো তুলে দিলে নদী এবং এলাকার খালগুলো বাঁচবে। শুনানিতে হালদা নদী, কর্ণফুলী নদী, সাঙ্গু নদী ও মাতামুহুরী নদীপারের নারী-পুরুষ অংশ নেন।