অধ্যক্ষ আবু তৈয়ব
শিক্ষাই পথ দেখিয়ে সমাজকে এতদূর আনতে পেরেছে। পেরেছে এই জন্য যে শিক্ষা কখনও বৈষম্য মেনে নেয় না, বরং সাম্য প্রতিষ্ঠার পথ দেখায়। সামাজিক শক্তির প্রবৃদ্ধি ঘটায়ে চলে বলে মানুষের জীবন-মান বেড়ে চলে। মানুষ তো স্বভাবজাতভাবে স্বার্থবাদী ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক। তার খোলস ভেঙ্গে সামাজিক হয়ে উঠার জন্য, পরার্থপরায়নের মাধ্যমে নিজস্ব শক্তি বাড়ানোর জন্য শিক্ষা পথ দেখায়। কাজ করে যায়। শিক্ষার পথে থাকতে পারা সমাজ ও দেশই তাই এত উন্নত হতে পেরেছে। শিক্ষায় উন্নত হওয়া সমাজের মানুষ বোঝতে পারে প্রতিবেশীকে ভালো রাখতে পারলেই নিজে ভালো থাকতে পারে। সমাজ ভালো রাখতে পারলেই নিজে ভালো থাকার নিশ্চয়তা থাকে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে শিক্ষার কী এমন ক্ষমতা আছে ব্যক্তির, সমাজের এত উন্নয়ন ঘটাতে পারে। শিক্ষার কী কী ক্ষমতা আছে তা বোঝতে পারি না বলে শিক্ষার সঠিক পথে আমরা অনেকেই থাকতে পারি না। থাকতে পারি না বলেই আমাদের এতদুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। পারছি না ব্যক্তিকে ভালো রাখতে, পারছি না পরিবারকে ভালো রাখতে, পারছি না রাষ্ট্র ও সমাজকে ভালো করতে, সমাজকে মেরামত করতে। ফলে পরিচর্যা করতে না জানায় ফুল-ফলের বাগান যেমন ঝোপজঙ্গলে পরিণত হয় তেমনি শিক্ষার পথে থাকতে না পারায় ব্যক্তি সম্পদ আপদ হয়ে উঠছি। তাই শিক্ষার ক্ষমতাকে অনুধাবনে রাখতে হয়। এখন শিক্ষা আমাদেরকে নিয়ে কী কী করে চলে তার উপর দৃষ্টি দেয়া যাক।
মানব সন্তান অসীম অপার শক্তি নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। সেই অসীম অপার শক্তিকে আমরা শিক্ষার পরিভাষায় মেধা-মনন বলি, কাজের বা বিষয়ের দক্ষতাও বলি। তবে সেই মেধা-মননের অদম্য বহিপ্রকাশ ঘটায়, বিকশিত করে শিক্ষা। সর্বজনীনভাবে শিক্ষাই পারে সেই কাজটি করতে। শিক্ষার এই মানবিক প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির জৈবিক মাংস পিÐটি মানবিক মানুষে, দায়িত্বশীল মানুষে ও সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। অন্য কথায় শিক্ষাকে সঠিকভাবে গ্রহণ ও ধারণ করতে পারলে আমরা মানুষ হয়ে উঠার পথে থাকতে পারি। কেননা শিক্ষা মানুষের ‘অপ-মানুষ’কে ধ্বংস করে’ মানবিক মানুষ’কে গড়ে তোলার কাজ করে যায়। এখন কথা হলো শিক্ষা কী ভাবে কাজ করে। তার কাজের ধারাগুলোতে আমরা কতটুকু মনোযোগী, দেখা যায় আময়াদের পিছিয়েপড়া সমাজে শিক্ষার ধারার প্রতি আমরা উদাসীন থাকি। তাই আজ আমরা শিক্ষার সঠিক পথে থাকতে পারছি না। মানুষকে জীবন ও জীবিকার তাগিদে ছুটতে হয়। সেই ছুটার পথকে আরো মসৃণ করতে ও স্বস্তিদায়ক করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চেষ্টা করে যায়। এবং উন্নত জীবনে পৌঁছার সংগ্রামে মানুষকে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়, নানা সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। সেই বাঁধা অতিক্রমে ও সমস্যা মোকাবেলার সফলতা নির্ভর করে তার মেধা শক্তি, মননের বিকাশ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর দক্ষতার উপর,যা যোগান দেয় শিক্ষা।
শিক্ষার গতির সাথে এই দক্ষতা নিয়ে সমানুপাতিক হারে এগিয়ে থাকতে হয়। এগিয়ে থাকার সক্ষমতা ধারণ করে রাখতে হয়। প্রাগৈতিহাসে শিক্ষার গতিকে শ্লথ থাকতে হয়েছিল বলে পাথরের সভ্যতায় ৫ (পাঁচ) লক্ষ বছর ধরে আমাদেরকে আটকে থাকতে হলো, কৃষি সভ্যতায় আবদ্ধ থাকতে হলো পাচঁ হাজার বছর। তখন শিক্ষার গতি বাড়ানোর পথে অন্তরায় হয়ে দেখা দিত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম না থাকা, শিক্ষাকে ধারণ করে পরবর্তী যুগের কাছে নিয়ে যাওয়ার দুর্বল ব্যবস্থা, জীবন ব্যবস্থাতার অভিন্নতা, অভিজ্ঞতা স্থানন্তরের নানা বাধাঁ ও প্রতিকূলতা। পরবর্তি সময়ে কাগজ ও মুদ্রণ যন্ত্রের উদ্ভাবনে শিক্ষার গতি বাড়লেও স্থল যোগাযোগ, আন্তদেশীয় যোগাযোগ তেমন না থাকায় শিক্ষার গতি সীমাবদ্ধ থেকে যায়। উনবিংশ শতাব্দির শেষের দিকে বিদ্যুৎ এর, বিংশ শতাব্দিতে কম্পিউটার এবং একাবিংশ শতাব্দিতে ডিজিটাল এর উদ্ভাবন-প্রসারে শিক্ষা এবং জ্ঞান সঞ্চয়ের গতি এতই বেড়ে গেল যে তার সাথে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠা, অভিযোজিত হওয়া, অনেক দেশের, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না হওয়া শুরু হলো। শিক্ষা ও জ্ঞানের গতির তীব্রতায় এখন দ্রæত পাল্টে যাচ্ছে জ্ঞান রাজ্য, আমাদের চিন্তা ও প্রযুক্তির জগত।
আগে শিক্ষাকে ব্যক্তি উন্নয়নের হাতিয়ার মনে করা হতো। সমাজ উন্নয়নের কথা থাকতো গৌণভাবে। আবার শিক্ষা গ্রহণ মানে গুরু থেকে তালিম নেওয়া ও গ্রন্থের তথ্যগুলো স্মরণ করতে পারা বা লিখতে পারাকে বুঝাতো। কিন্তু এখন মানুষের মেধা-মনন বিকশিত করায় শিক্ষা যে কৌশল নিয়ে কাজ করে তার অন্যতম লক্ষ্য ব্যক্তিকে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পদে পরিণত করা, উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে ত্বরান্বিত করায় ব্যক্তিকে সক্ষম ও অভ্যস্ত করে তোলা। তাই শিক্ষার কাজ ও কৌশলগুলোর মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে, আধুনিকায়ন হয়েছে। ফলে শিক্ষার গতিপ্রকৃতির দিকে আমাদের মনোযোগ বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। যা দ্রæত পরিবর্তন হয়ে চলে, গতি বাড়িয়ে দেয় তাকে বোঝতে, ধারণের জন্য অতিরেক মনোযোগ ও সচেতনতার দাবী রাখে। যেমন ইংরেজদের শাসন আমলে পশ্চিমা শিক্ষা ও সংস্কৃতির গ্রোতে এই দেশের শিক্ষায় দ্রæত পরিবর্তন আসতে শুরু করে। মুসলমানরা সেই ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব বোঝতে দেরি করায়, সেই শিক্ষার কী ফায়দা বা সুযোগ বোঝতে না পারায় অন্যদের তুলনায় শতবছর পিছিয়ে থাকতে হলো, আবার এক জাতি হয়ে উঠার গুরুত্ব অনুধাবন করতে না পারায় ভিন্ন জাতি (?) হতে গিয়ে কখন সাম্প্রদায়িক হয়ে গেলাম বা করে ফেলল টেরও পেলাম না। সচেতন না থাকায়, দূরদর্শিতার অভাবে, তার জন্য শিক্ষার মূলধারা অনুসরণ করতে না পারার ফলে কতই না রক্তপাতের শিখার হতে হলো। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়তে হলো। এতে সামাজিক অস্থিরতা বেড়ে গেল, সামাজিক মূল্যবোধে অবক্ষয় হতে থাকল। যার ফলে সামাজিক ইতিবাচক শক্তি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকল। এতে আমাদের মেধার যেমন অপচয় হতে থাকল মননের বিকাশও সংকীর্ণতর হতে থাকল। যদি আমাদের সামনে ও চিন্তার জগতে অপ-ক্ষমতা, বর্ণবাদ ও কুপ্রথার নানা প্রেক্ষিতের আবর্জনা ও দূষণ সামনে না আসত বা এসবের ফাদেঁ না পড়ে পারতাম তা হলে শিক্ষার কথা, শিক্ষা ধারণের কথা, শিক্ষা বিকাশের পথে আমাদের থাকতে পারতাম। তা পারার জন্য শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরির কথা, প্রকৃত শিক্ষার কথা আরও জোরালো করার কথা বেশি বেশি আসত। আর আমরাও তখন জাপানের মত সকল সময়ে, সকল অবস্থায়, সকল প্রেক্ষিতে, রাষ্ট্রীয় চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে, বাজেটের সর্বোচ্চ স্কেলে শিক্ষাকে রাখা সম্ভব হতো। শিক্ষাকে জীবন যাপনের কেন্দ্রে রেখে, সামনে রেখে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পারতাম। তখন প্রকৃত শিক্ষার ধারায় থাকতে পারতাম। আর উন্নত জীবন ব্যবস্থায় পৌঁছা সম্ভব হতো। তা না পারায় বক্তিস্বার্থ, ফন্দি ফিকিরের নানা কারণে প্রথাপীড়নে,বর্ণবাদের উত্তান-পতনের ঝগড়ার কবলে পড়তে হতো না। আমাদের সেই অদম্য মস্তিষ্কস্থ সৃজনী শক্তি অপচয় হতে থাকত না। যার জন্য কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও শিক্ষাবিমুখ সমাজের ভিতর দিয়ে সত্যিকারের শিক্ষাধারায় আমরা থাকতে পারিনি। প্রকৃত শিক্ষার পথে থাকতে না পারায়, ধারণ করতে না পারায় আমদের কাছে শিক্ষা বিকৃত, পুঙ্গ ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা তা বোঝে উঠতে পারি না। ফলে সেই বিকৃত করা সিউডশিক্ষা, অসুস্থ ও পঙ্গু করে দেওয়া শিক্ষা শিক্ষাগ্রহীতাকে প্রকৃত শিক্ষা দক্ষতায় গড়ে তুলতে পারে না। যার জন্য এখন সমাজ থেকে, প্রতিষ্ঠান থেকে, পরিবার থেকে পুঙ্গ শিক্ষা বিচ্ছিন্ন হয়ে শিক্ষাগ্রহীতার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় হয়ে উঠেছে। যেখানে সফলতার প্যারামিটার হলো লেখাপড়া করে পরীক্ষায় অর্জিত গ্রেডই পরিমাপক। শিক্ষাগ্রহীতার দেশপ্রেম না থাকুক, দায়িত্বশীল না হয়ে উঠুক, সামাজিক নরম-এ ভালো না হউক, সে যদি বইয়ের তথ্য-বিষয়গুলো হুবহু উত্তরপত্র/পরীক্ষার খাতায় তোলে দিতে পেরে এক্ট পায়, তবে সেই শিক্ষাগ্রহীতা উত্তম, চাকুরী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে এই জ্ঞানবিমুখ সমাজে ধরা হয়। এই মানসিকতাতেই আমাদের গলদ, এই মানসিকতায় তো প্রকৃত শিক্ষার মূলধারার পথে থাকা সম্ভব না। তাই প্রকৃত শিক্ষার ধারায় চলতে, থাকতে ও তাকে ধারণ করতে অবশ্যই শিক্ষার প্রকৃত গতিধারার প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে দিতে হবে, তার গুরুত্ব অনুধাবনে রাখতে হবে। যেমন আগের শিক্ষার ধারায় শিক্ষা গ্রহীতাকে শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে রাখা হতো না। শিক্ষাগ্রহীতার সুখ-দুঃখের কথা, অভিজ্ঞতার কথা ভাবা হতো না। যে কোনভাবে শিখন বিষয়টি তার মাথায় ডুকিয়ে দিতে পারলেই হতো। সফল তখনই মনে করা হতো যদি শিক্ষা গ্রহীতা সেই মতে বলতে পারে, করতে পারে বা আচরণ করে দেখিয়ে দিতে পারে। কিন্তু শিক্ষার মূলকাজ তো সেই সব না।
আধুনিক ধারণায় শিক্ষার মূল কাজ হলো প্রথমত, শিক্ষা শিক্ষাগ্রহীতাকে শুধু জ্ঞান জানানো না, বরং জ্ঞান তৈরি করাতে, জ্ঞান উদ্ভাবনেও দক্ষ করে তুলা হলো প্রধান কাজ। দ্বিতীয়ত, আবার সেই অর্জিত জ্ঞান বা উদ্ভাবিত জ্ঞানকে প্রয়োগ উপযোগী করে দেয়া, প্রয়োগের নানা ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়া। তৃতীয়ত, শিক্ষাগ্রহীতার অমূল্য সম্পদ হলো তার আবেগিক তাড়না, যা অনেকটা গাড়ির জ্বালানির মত। সেই আবেগ উচছ্বাসকে অপচয়ের হাত থেকে রক্ষা করা, তাড়িত হওয়ার আবেগকে পরিমার্জিত করা, প্রশমিত করা, কল্যাণমুখী করা। চতুর্থত, সময়ের উপযোগী অর্জিত দক্ষতায় মানবিক থাকার সক্ষম করা। অন্যকথায় শুধু তথ্যপ্রযুক্তির রোবটের মত কাজে, কর্মে সুদক্ষ হলে চলবে না, পাশাপাশি মানবিকতাকেও ধারণে সক্ষম হতে হবে। মোটা দাগে উল্লেখ করা শিক্ষার এই চারটি কাজ আমরা গ্রহণ করতে পারি ও শিক্ষার সেই ধারায় থাকতে পারি তা হলে আমরা ও আমাদের প্রজন্মদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা সম্ভব হবে। যারা সুনাগরিক হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রকে সুরক্ষা দেবে, দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে। যেখানে প্রত্যেক শিক্ষিত ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হয়ে থাকবে, কাজ করে যাবে। যদি আগের মতো অর্থাৎ ইংরেজদের আমলের মতো প্রকৃত শিক্ষার গুরুত্ব বোঝতে না পারি, সমসাময়িক শিক্ষার এই ধারা ও প্রক্রিয়াকে অনুসরণ করতে না পারি তা হলে এই একাবিংশ শতাব্দিতে আমরা আবারও এই জাতি পিছিয়ে যেতে থাকবে। যার খেসারত আমরা এখনও দিচ্ছি ভবিষ্যতেও আমাদের প্রজন্মরা দিতে থাকবে।
পড়া মুখস্থ করে, শিখে, বই-গাইডের পড়া উত্তর পত্রে লিখে ভালো ফলাফল করা, ভালো আবৃত্তি করতে পারা, ভালো সামাজিক আচরণ করতে পারাকে শিক্ষাগ্রহীতাকে এখন এই সময়ে প্রকৃত শিক্ষিতজন বলা যাচ্ছে না। এই প্রক্রিয়ার শিক্ষাকে আচরণবাদী শিক্ষা বলা হচ্ছে। যেখানে শিক্ষাগ্রহীতার বাহ্য বা অপরের পঞ্চইদ্রিয়তে ভালো বোধ জাগাতে পারে। কিন্ত এখন প্রয়োজন গঠনবাদী শিক্ষা, যার চারটি মোটাদাগের ধাপ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
গঠনবাদী শিক্ষা কার্যক্রম এখন উন্নত সব দেশে চালু হয়েছে। ভারতবর্ষেও চালু আছে। আমরা সেই ক্ষেত্রে অনেক অনেক পিছিয়ে। এখানেই প্রকৃত শিক্ষার ধারায় আমরা থাকতে পারছি না। এখনও আমরা সেই মধ্যযুগের আচরণবাদী শিক্ষা নিয়ে পড়ে থাকছি। মধ্যযুগের সমরাস্ত্র দিয়ে যেমন এই আধুনিক যুগের যুদ্ধ ক্ষেত্রে টিকে থাকা যায় না তেমনি মধ্যযুগীয় আচরণবাদী শিক্ষার ধারা, আচরণবাদী শিক্ষার হাতিয়ার দিয়ে এই আধুনিক সময়ে টিকে থাকে, এগিয়ে থাকা সম্ভব না। জাপানের দিকে তাকালে তা বোঝা যায়। আমরা দ্বিতীয় ভুল আর করতে চাই না, গঠনবাদী শিক্ষার ধারায় জাতিকে উঠায়ে দিতে হবে, পরিচালিত করতে হবে। তবেই শিক্ষা ফলপ্রসূ হয়ে উঠবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। সেই উন্নয়ন হবে মেধা-মননের, শিল্প-সাহিত্যের, সামাজিক মূল্যবোধের, সুনাগরিক গড়ে উঠায়। তাই আগের কথা উল্লেখ করে নিবন্ধটি শেষ করতে হচ্ছে, শিক্ষা ভুল করে না, আমরা ভুল করি, ভুল পথে চলি। তার সাথে যোগ করে বলতে হচ্ছে সেই ভুল পথে চলায় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার এত দুর্দশা। শিক্ষিতজন নিয়ে এত কুতর্ক। এখন সময় হয়েছে প্রকৃত শিক্ষার আধুনিক ধারাকে গ্রহণ করা, সেই ধারায় থাকা ও তার গুরুত্ব অনুধাবন করা। তবেই সমাজের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। মানুষের সত্যিকারের মুক্তি ঘটবে। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়ে উঠবে।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
অধ্যক্ষ- খলিলুর রহমান মহিলা (ডিগ্রি) কলেজ।