শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে যুক্ত হলো আরও ৬ ই-কার

4

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ করতে দ্বিতীয় ধাপে ৬টি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ই-কার (ইলেকট্রনিক কার) যুক্ত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪ টায় চবির স্মরণ চত্বরে এই ই-কার সেবার উদ্বোধন করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।
এসময় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজতর করার লক্ষ্যে ই-কার সেবা চালু করা হয়েছে। গত ১৯ আগস্ট এ সেবা চালু হয়েছিল। আমরা কথা দিয়েছিলাম ধীরে ধীরে ই-কারের সংখ্যা বাড়বে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে নতুন করে ৬টি ই-করা যুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ই-কার আমাদের গ্রিন ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সহযোগিতা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অংশীজন হিসেবে বলতে চাই রিকশা ও সিএনজি চালকদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো বৈরিতা নেই। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যাতে সহজবোধ্যভাবে যাতায়াত করতে পারে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) আরও বলেন, বর্তমান চবি প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্যাম্পাসে সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ সৃষ্টিতে এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দৃশ্যমান হয়েছে। আজ দ্বিতীয় ধাপে ই-কারের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য সেবার পরিধি আরও বেড়েছে।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী প্রক্টর মো. নুরুল হামিদ কানন ই-কার চালকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-নির্দেশনা মেনে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেন। নির্দিষ্ট রোড ব্যতিত অন্য কোথাও গাড়ি না চালানোর পরামর্শও দেন তিনি। এসময় তিনি চালকদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করার অনুরোধ জানান।
চবি নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চাকসুর নবনির্বাচিত জিএস সাঈদ বিন হাবিব, এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ও যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁঞা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য-ফটোগ্রাফি) খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন, ই-কার কোম্পানির পক্ষ থেকে টেকনিশিয়ান মুনসুর আহম্মেদ ও নবনির্বাচিত চাকসুর অন্যান্য প্রতিনিধি, শিক্ষার্থীবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এসময় চাকসুর নবনির্বাচিত জিএস সাঈদ বিন হাবিব দ্বিতীয় ধাপে ই-কার সেবা উদ্বোধন করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করা অন্যতম দাবি ছিল। বর্তমান প্রশাসন সে দাবি ধীরে ধীরে পূরণ করছে। আরেকটি বড় সমস্যা আবাসন সমস্যা। অল্প সময়ে আবাসন সমস্যা পরিপূর্ণভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। সেজন্য প্রতিটি হলের বর্ধিত অংশ করে দিলে শিক্ষার্থীদের প্রকট সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে। পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ক্ষেত্রে কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জানান তিনি।
নবনির্বাচিত এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, বর্তমান প্রশাসন শিক্ষর্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যেসব সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করছে এজন্য প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
চাকসুর যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁঞা বলেন, ক্যাম্পাসে বড় সমস্যা হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমি আশা করি এ ই-কার সেবা চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। এসময় তিনি এমন উদ্যোগের জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৬টি ই-কারের মাধ্যমে এ সেবা প্রদানের যাত্রা শুরু হয়েছিল গত ১৯ আগস্ট। দ্বিতীয় ধাপে শুক্রবার আরও ৬টি ই-কার যুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও ই-কার সংযোজনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এ সেবা বৃদ্ধি পাবে বলে চবি সূত্রে জানা গেছে। ই-কারসমূহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রোডে চলাচলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদান করবে। ই-কারের ভাড়া সর্বনিম্ন ৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি