শিক্ষাবোর্ডে তালা দিল কিছু পরীক্ষার্থী

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা অন্ততঃ দুই মাস পেছানোর দাবি তুলে হঠাৎ চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করেছে একদল পরীক্ষার্থী। এ সময় তারা মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব রেখে পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন তারা। গতকাল রবিবার দুপুরে ৩০ থেকে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সামনে যায়। এ সময় ‘সুরক্ষা না পরীক্ষা, সুরক্ষা সুরক্ষা’-এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
জানা যায়, প্রথমে তারা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। সেখানে শিক্ষাবোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা সবাই একসঙ্গে গিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার দাবি তুললে আপত্তি জানান কর্মকর্তারা। এরপর তারা মিছিল নিয়ে বোর্ডের মূল ফটক পার হয়ে সামনের চত্বরে ঢুকে পড়ে। তখন শিক্ষাবোর্ডে কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে প্রবেশের ফটকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সামনের চত্বরে বসে পরীক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘন্টারও বেশিসময় ধরে ¯েøাগান দেয়। এরপর বের হয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে এর সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শিক্ষাবোর্ডের একজন কর্মকর্তা গিয়ে তাদের দাবির বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানানোর আশ্বাস দেওয়ার পর বিকেল ৪ টার দিকে তারা চলে যায়।
পরীক্ষার্থীরা জানান, করোনায় প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে। এ অবস্থায় পরীক্ষা নিয়ে আমাদের কেন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে? তিন ফুট দূরত্বে পরীক্ষার্থীদের বসানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা এটা মানি না। আমাদের আগের নিয়মে বসতে দিতে হবে। আমরা যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাব, গেইট দিয়ে ঢোকার সময় ভিড় হয়, অভিভাবকদের জটলা হয়- তখন আমরা করোনায় আক্রান্ত হবো না? তাহলে শুধু পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর কেন এত কড়াকড়ি? একজন পরীক্ষার্থীও যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাকে কী শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা ফিরিয়ে দিতে পারবেন? আমাদের দাবি হচ্ছে, পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে হবে। তখন করোনা পরিস্থিতি দেখে তারপর আবার রুটিন দিতে হবে।
প্রসঙ্গত করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এবার তিন ফুট দূরত্বে পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসের নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃবোর্ডের। এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের ও শিক্ষার্থীদের জন্য সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে।
এদিকে ফটকে তালা ঝুলিয়ে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে শিক্ষাবোর্ডে সেবা নিতে আসা লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। জরুরি প্রয়োজনে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বের হতে পারেননি।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, কয়েকজন পরীক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছিল। আমরা একজন ডেপুটি কন্ট্রোলারকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি তাদের বুঝিয়ে বলেছেন যে পরীক্ষা পেছানোর বিষয়টি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের হাতে নেই। তবুও আমরা তাদের দাবি মেইল করে আন্তঃবোর্ডে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন। এখন মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেয় সেভাবে হবে। বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তারা চলে গেছে।