নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বলেছেন, গত ১০ মাসে যাত্রীবান্ধব সেবায় এবং মানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। আগের তুলনায় যাত্রীদের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে এবং সেবার মান ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বুধবার ‘বিদেশফেরত ও বিদেশগামী যাত্রীদের সেবা-সহায়তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের সমস্যা, প্রতিকার ও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মুক্ত আলোচনা হয়।
সেবার মান বৃদ্ধি সম্পর্কে বিমানবন্দরের পরিচালক শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বলেন, এয়ারপোর্টে তথ্য সহায়তা কেন্দ্র, ফ্রি ওয়াইফাই, টেলিফোন বুথ, জরুরি অ্যাম্বুল্যান্স, পৃথক নামাজ কক্ষ ও ব্রেস্টফিডিং কর্নার চালু করা হয়েছে। মিট অ্যান্ড গ্রিট সার্ভিস ও অনলাইন রেন্ট-এ-কার সুবিধাও চালু হয়েছে।
তবে এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাষাগত সমস্যা, তথ্য ঘাটতি ও প্রতারণার ঝুঁকি এখনো রয়েছে। এসব কাটিয়ে উঠতে সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।
পরিচালক জানান, শাহ আমানত বিমানবন্দরের প্রায় ৭৭ শতাংশ যাত্রী মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসী। এ কারণে অভিবাসী বিষয়ক সেবায় প্রত্যাশীর মতো সংস্থাকে বিমানবন্দরে সরাসরি কার্যক্রম চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে প্রত্যাশীর প্রধান নির্বাহী মনোয়ারা বেগম বলেন, গত ৪০ বছর যাবত প্রত্যাশী প্রবাসীদের নানান অসুবিধা, চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে আসছে। হেলভিটাস বাংলাদেশের অর্থায়নে প্রত্যাশী তার trengthening & Informative Migration Systems (SIMS) Project phase-2 এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ১২টি উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে বিদেশে অবস্থানরত ও বিদেশফেরত প্রবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন ও তাদের পরিবারের মানোন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রত্যাশী চারটি ধাপে এসকল সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষ যেহেতু আমাদেরকে আহবান জানাচ্ছেন সেহেতু আমরা অবশ্যই প্রবাসীদের কল্যাণে বিমানবন্দরে সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী এবং পরিচালক মহোদয়ের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে যে যে খাত গুলোতে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন প্রত্যাশী নিশ্চিতভাবে তাতে অংশগ্রহণ করবে।
অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো থেকে বেশি মানুষ বিদেশে যান তার মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। যে জেলাগুলোর প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যেও আছে চট্টগ্রাম। তবে এখনও দেখা যায় লোকজন জেনে বুঝে দক্ষ হয়ে বিদেশে যান না। দক্ষ হয়ে তথ্য জেনে বিদেশে গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর বিদেশ ফেরতদের কল্যাণে আমরা সরকারি বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে একসাথে কাজ করছি।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিমানবাহিনী টাস্কফোর্সের প্রধান উইং কমান্ডার শামসুন নীহার, স্টেশন এয়ার ট্রাফিক অফিসার সাধন কুমার মহন্ত, ডিজিএফআইয়ের স্কোয়াড্রন লিডার তারিক আজিজ মৃধা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরী এবং হেলভিটাস বাংলাদেশের প্রেমাংশু শেখর সরকার।
এছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কার্যক্রম বাস্তবায়নরত সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কসহ সরকারি সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। মুক্ত আলোচনায় প্রবাসীদের নানান অসুবিধা ও তার উত্তোরণে সমাধানের মতামত উঠে আসে।