প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশে শহীদ ডা. মিলন দিবস পালিত হয়। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে নভেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের সমর্থিত সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডা: শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে ১৯৯১ খ্রীস্টাব্দ থেকে প্রতি বছর শহীদ ডা. মিলন দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। ডা. মিলনের মধ্য দিয়ে তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়। এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।
ডা. শামসুল আলম খান মিলনকে সচরাচর শহীদ ডা. মিলন হিসাবে অভিহিত করা হয়। তার মত্যুকে মহান আত্মত্যাগ হিসাবে গণ্য করা হয়। মৃত্যুকালে পেশায় চিকিৎসক শামসুল আলম খান মিলন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের তৎকালীন যুগ্ম-মহাসচিব।
ডা. মিলনের জন্ম ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২১ আগস্ট ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে ২য় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এইচএসসি পাশ করেন নটরডেম কলেজের ছাত্র হিসাবে। এর পর চিকিৎসক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন (ব্যাচ কে-৩৪)। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করেন ও ডাক্তারী পেশায় যোগ দেন।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের স্মরণে একটি ২ টাকা মূল্যমানের ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে। ১৯৯১ থেকে প্রতিবছর রাজনৈতিক ও চিকিৎসক সংগঠনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ডা. মিলন দিবস পালন করে। বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে থাকে শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ ধারণ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে ডা. মিলনের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা ইত্যাদি।
* মিলনের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে নির্মিত হয়েছে “নিঝুম” নামে স্মৃতিস্তম্ভ।
* তার স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্নি ডাক্তারদের হোস্টেলের নামকরণ করা হয় ‘শহীদ ডা. মিলন ইন্টার্নি হোস্টেল’ এবং ছাত্রীদের একটি হলের নাম রাখা হয় ‘ডা. মিলন হল’। সূত্র : উইকিপিডিয়া