চন্দনাইশ প্রতিনিধি
চন্দনাইশ-সাতকানিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শঙ্খ নদীতে ঘটছে উপর্যুপরি বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনের ঘটনা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বিষ প্রয়োগ করেছে দুর্বৃত্তের দল। গত শুক্রবার গভীর রাতে শঙ্খনদীর দোহাজারী পয়েন্টে বিষ প্রয়োগ করা হয়। এতে বেশ কয়েক প্রজাতির মাছসহ অসংখ্য জলজ প্রাণি মরে ভেসে উঠতে দেখা গেছে। এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি শঙ্খ নদীর বান্দরবান ও চন্দনাইশ সীমান্তের রেইচা এলাকা এবং দোহাজারীর দিয়াকুল অংশে বিষ প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত শঙ্খনদীর দোহাজারী ও কালিয়াইশ অংশে বিষ প্রয়োগ করে। বিষের প্রভাবে দেখা দেয় মাছের মড়ক। গত শনিবার ভোর থেকে নদীর পানিতে চিংড়ি,চিরিং ও বাইলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে যেতে দেখে ভোর থেকেই স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়ে। এ সময় প্রত্যেকেই এক কেজি থেকে দুই কেজি পর্যন্ত মাছ পেয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ ৪/৫ কেজি পর্যন্ত মাছ পেয়েছেন। নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত রাতের অন্ধকারে নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করে আসছে। বিষের প্রভাবে নদীর চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠলে দুর্বৃত্তরা মরা মাছ ধরে ভোরের আলো ফুটতেই পালিয়ে যায়। এই শুকনো মৌসুমে শঙ্খ নদীতে বার বার বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের ঘটনা ঘটলেও বরাবরের মতোই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বিষ প্রয়োগকারী দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা জানায়, শঙ্খনদীর দোহাজারী ও কালিয়াইশ অংশে বসবাসকারী কয়েকজন রোহিঙ্গা শঙ্খনদীতে বিষ প্রয়োগ করছে বলে তাদের ধারণা। তারা রাতেই চাহিদা মতো মাছ আহরণ করে ভোরের আলো ফুটতেই মাছ নিয়ে চলে যায়। এ ব্যাপারে তদন্ত করলে বিষ প্রয়োগকারীরা সহজেই শনাক্ত হবে বলে তারা জানান তারা।
এদিকে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কিংবা নদীতে বিষ প্রয়োগে নিরুৎসাহিত করতে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে শঙ্খ নদীর জীববৈচিত্র্য।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বপন চন্দ্র দে জানান, নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন দন্ডনীয় অপরাধ এবং বিষ প্রয়োগে মাছ মারার বিষয়ে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নদীতে বিষ প্রয়োগের খবর পেলেও কারা বিষ প্রয়োগ করছে আমাদের কেউ সঠিক তথ্য দিতে না পারায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তিনি নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নদীতে বিষ প্রয়োগকারীদের ব্যাপারে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কারা বিষ প্রয়োগ করছে তথ্য দিতে পারলে তাৎক্ষণিক মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।