প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট উত্তাল ঢেউয়ে মানুষের বসতঘর, ফসলি জমি, মসজিদ, মন্দির ও কবরস্থানসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা শঙ্খের গর্বে হারিয়ে যাওয়ার কারণে শঙ্খনদের নামের আগে করালগ্রাসী শব্দটি যুক্ত হয়ে আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক চিত্র ভিন্ন। নদের দুই পাশেই পানি, চলছে নৌকা। তার মধ্যখানে জেগে উঠা চরে চীনা বাদাম চাষ করে বেশ আলোচনায় এসেছেন উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের এনু আলী (৬০)। স্থানীয় ভাষায় আনুমানিক দুই কানি বা ৮০ শতক চরে বাদাম চাষ করেছেন তিনি। ফলন ভাল। বাজারেও দাম ভাল থাকায় বেজায় খুশি তিনি।
সম্প্রতি সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার মধ্যবর্তী বিশ্বাসের হাট এলাকা পরিদর্শনকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বাসের হাটের অদূরে শঙ্খনদকে বিভক্ত করে রেখেছে বিশাল একটি চর। আর এ চরেই বাদাম তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এনু আলীসহ বেশ কয়েকজন বৃদ্ধা মহিলা।
এসময় এনু আলীর আথে আলাপকালে জানান, বেশ কয়েক বছর থেকে একই স্থানে চর জাগছে। আর এই চরের জমি লাগিয়ত নিয়ে সেখানে বাদাম চাষ করেন তিনি। চলতি বছরে আগাম বৃষ্টি দেখা দেয়ায় বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষেত তলিয়ে যেতে পারে, এই কারণে একটু আগেভাগেই বাদাম তুলে নিচ্ছেন তিনি। মাত্র ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০ শতক চর জমিতে বাদাম চাষ করলে ফলন ভাল হলে কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকারও বেশি বাদাম বিক্রি করা যায়।
কম পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ার কারণেই মূলত এনু আলীর মত আরো অনেক কৃষক বাদাম চাষে ঝুঁকছে বলে জানালেন সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায়।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শম্ভু নাথ দেব জানান, চলতি মৌসুমে সাতকানিয়া উপজেলায় মোট ৯০ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় তিন মে. টন বাদাম উৎপাদন হয়। সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, সাতকানিয়া উপজেলার মধ্যে চরতী, আমিলাইষ, কালিয়াইশ, বাজালিয়া ও পুরানগড় এলাকার চর মাটিতে বাদাম চাষ হয়। কম পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়ার কারণে কৃষকরা চীনা বাদাম চাষ করেন। বর্তমানে সাতকানিয়ায় তিন দানা জাতের বাদাম চাষ হচ্ছে।