বাঁশখালী প্রতিনিধি
লবণের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ গেইটে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি করে লবণের ন্যায্য দাম থেকে কৃষকদের বঞ্চিত করার প্রতিবাদে এবং সিন্ডিকেট ভেঙে লবণের ন্যায্য দাম নির্ধারণের দাবিতে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহব্বায়ক আশরাফ মাহদি।
দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য জাওয়াদুল করিমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহব্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের আহব্বায়ক আবদুর রহমান, লবণ চাষী মোহাম্মদ কাশেম, এনসিপি’র বাঁশখালীর সংগঠক রিয়াজ উদ্দিন, তাওহীদ, আব্দুর রহমান, মীর তোয়াহা শিকদার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর নেতা আবরারুল করিম, মাশফিকুর রহমান চৌধুরী মিশকাত প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফ মাহদি বলেন, ‘বাংলাদেশে লবণের মত রপ্তানিযোগ্য পণ্য আজ সিন্ডিকেটের কবলে। এই সিন্ডিকেট লবণচাষীদের ন্যায্য মূল্য না দিয়ে আমদানির পাঁয়তারা করছে। লবণচাষীদের উপর এই শোষণ বন্ধ করতে জনতাকে সাথে নিয়ে এনসিপি সকল সিন্ডিকেট রুখে দিবে’।
সভাপতির বক্তব্যে মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘যদি সিন্ডিকেট ভেঙে অতি দ্রæত লবণ চাষীদের ন্যায্য মূল্য দেওয়া না হয় তাহলে কক্সবাজার থেকে বাঁশখালীর চাষীরা পাল্টা সিন্ডিকেট করবে, এক ফোটা লবণ বের হতে দেবে না। অসাধু চক্র ভুলে যায় লবণ সংরক্ষণ করা যায়’। তিনি আরও বলেন, ‘বাঁশখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টিই প্রথম লবণ চাষীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, ন্যায্য মূল্য আদায় না করা পর্যন্ত এনসিপি কাজ করে যাবে’।
আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশে আমরা আর কোনো বৈষম্য চাই না। লবণ কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে লবণের দাম বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের লবণচাষীরা ভালো নেই, তাঁদের ঘরে ঈদ আসে নাই। অবিলম্বে লবণের দাম বাড়িয়ে পুনরায় দাম নির্ধারণ করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের আহব্বায়ক আবদুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের এই লবণ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিকভাবে রপ্তানি করে থাকে। কিন্তু যারা এই অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে তারা আজ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। লবণ ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট ভেঙে দিলেই লবণ চাষীরা তাদের ন্যায্যতা ফিরে পাবে।
মানববন্ধনে লবণ চাষী মোহাম্মদ কাশেম বলেন, ‘গত বছরও মন প্রতি ৪০০-৫০০-৬০০ টাকাও পেয়েছি। সেখানে এইবার মন প্রতি ১৮০-২০০ টাকা পাচ্ছি, আমরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি, খুব বেশি অভাবে আছে লবণ চাষীরা’।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামশেদুল আলমের সাথে সাক্ষাৎ করেন এনসিপি নেতারা। এসময় তারা লবণ চাষীদের নানান সমস্যা তাঁর কাছে তুলে ধরেন।