রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হঠাৎ ফোরজি

38

উখিয়া প্রতিনিধি
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে পুরো দেশে যখন অচলাবস্থা। ঠিক তখনই কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালু হয় নেটওয়ার্ক কোম্পানী ফোরজি সেবা। হঠাৎ ফোরজি নেট দেখে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার লোকজনের মাঝে দেখা যায় কৌতুহল। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে রবি, এয়ারটেল, টেলিটকের ফোরজি সেবা চালু হলেও সাড়ে ১১ টার দিকে উধাও হয়ে যায় বলে জানান স্থানীয়রা।
বালুখালী কাস্টমস রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসকারী গণমাধ্যম কর্মী শ ম গফুর জানান, সকাল ১০ টার দিকে কাস্টমস এলাকায় কয়েকজন যুবক জড়ো হয়ে মোবাইলে নেট দেখছিল, তখন
আমি তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা ফোরজি চালু হওয়ার কথা বলেন। পরে আমার মোবাইলে নেট চালু করলে রবিতে ফোরজি পাওয়া যায়।
কুতুপালং এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকাল ৯ টার দিকে তিনি মোবাইল চালু করলে রবি সিমে ফোরজি নেট দেখতে পান। সাড়ে ১১ টার পর থেকে আর ফোর-জি নেট পাওয়া যায়নি। গ্রামীণফোন অথবা বাংলালিংকের এই সেবা চালু হয়েছিল কিনা তা তিনি বলতে পারেননি।
পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী ফোরজি নেট চালু হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘদিন আমরা থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা থেকে বঞ্চিত। রোহিঙ্গাদের কারনে আমরা কেন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবো? তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা যেন চালু করা না হয়, কারণ রোহিঙ্গারা এ সেবার মাধ্যমে দেশের তথ্য বিদেশে পাচার করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকে। তাই এই নেট সুবিধা বন্ধ থাকায় অনেকাংশে রোহিঙ্গাদের অপতৎপরতা কমে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
হঠাৎ ক্যাম্পে ফোর-জি চালু হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহাবুবুল আলম তালুকদার বলেন, আমিও লোকজনের কাছ থেকে শুনেছি। তবে কনফার্ম হয়ে বলতে পারছি না। আমি এ বিষয়ে খোঁজ-খরব নিয়ে বিস্তারিত পরে জানাব।
এবিষয়ে নেটওয়ার্ক কোম্পানীর কোনো কর্মকর্তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থ্রি-জি, ফোর-জি সেবা চালু হলে আমরা স্থানীয়রা সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ব। কারণ রোহিঙ্গারা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে বড় আকারে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয়দের উপর হামলা চালায়। তাছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুহুর্তের মধ্যে সারাবিশ্বে পাচার করে দিয়ে বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে থাকে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের মোবাইল সুবিধা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে গত ১ সেপ্টেম্বর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তৎসংলগ্ন এলাকায় থ্রি-জি ও ফোর-জি সেবা বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি। সেই থেকে শুধুমাত্র ভয়েস কল সুবিধা ছাড়া সব সেবা বন্ধ হয়ে যায় এই অঞ্চলে।