নিজস্ব প্রতিবেদক
রেলওয়ের সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিদেশ থেকে ইঞ্জিন ও কোচ আমদানির পরিবর্তে যন্ত্রপাতি এনে দেশেই সংযোজন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ লক্ষ্যে রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত কারখানাকে ওয়ার্কশপে উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলছে।
গতকাল সকালে নগরের পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলওয়ে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন মেরামত কারখানা, ডিজেল ওয়ার্কশপ কারখানা, রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ইউরোপিয়ান ক্লাব ও রেলওয়ে জাদুঘর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। পরিদর্শন শেষে রেলওয়ের এসব স্থাপনার পরিবেশ ও মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বাইর থেকে ইঞ্জিন ও কোচ আনার পরিবর্তে যন্ত্রপাতি এনে দেশেই সংযোজনের প্রক্রিয়া চলছে। এজন্য ওয়াগন ও ক্যারেজ মেরামত কারখানাকে ওয়ার্কশপে উন্নীত করা হবে। এতে সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে। বর্তমানে এসব ইঞ্জিন ও কোচ আনতে হলে দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দিতে হয়। এরপর তারা তৈরি করে এখানে পাঠায়। এতে প্রচুর সময় লাগে।
পরে নগরের সিআরবিতে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির। এ সময় তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও স্থাপনা ঘুরে দেখেন এবং হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক, রেলপথ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। এই সময় উপস্থিত কর্মকর্তারা রোগী ভর্তি না হওয়া ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ হাসপাতাল পরিচালনায় বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। তারা বলেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। আবার রোগী ভর্তি হলেও কিছু বিধির কারণে সব রোগীকে খাবার সরবরাহ করা যায় না।
এ সময় রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, এখন বিভিন্ন বিভাগ বা দপ্তরে আলাদা আলাদা করে কাজ করা যাবে না। সবাই সরকারের হয়ে কাজ করবেন, জনগণের জন্য কাজ করবেন। আর নতুন ধরনের কোন স্থাপনা এই মুহূর্তে করা হবে না।
হাসপাতাল পরিচালনা ও সেবার মান বাড়াতে চারটি নির্দেশনা দিয়ে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিকিৎসক এই হাসপাতালে সংযুক্তি দিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও খাবার সরবরাহ করবে। এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক চুক্তি করবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামকে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
রেলওয়ের স্থাপনা ও হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে দুপুরে সিআরবিতে রেলওয়ের সার্বিক মানোন্নয়নে কর্মকর্তাবৃন্দ ও অংশীজনদের সাথে বৈঠক করেন রেল উপদেষ্টা। বিকালে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের অগ্রগতি নিয়ে চট্টগ্রামের সেবা সংস্থা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসেন তিনি।