পূর্বদেশ ডেস্ক
জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ও সংঘাতের ধাক্কায় তিন দফায় সময় বাড়ানোর পর ৩৭ থেকে ৩৮ লাখ আয়কর বিবরণী জমার পড়ার তথ্য দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
তবে ব্যক্তিগত আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার এ পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ৫ লাখ কম। আগের করবর্ষে ৪৩ লাখের বেশি রিটার্ন জমা পড়েছিল। দেশে অবশ্য কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা এর অনেক বেশি। টিআইএন থাকলে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও অনেকে তা জমা দেন না।
গতকাল রবিবার ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বর্ধিত সময়ের শেষ দিন ছিল। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার এ সময় আর বাড়ানো হবে না।
সরকারের প্রত্যাশা অনুযায়ী জমা না পড়ায় এর আগে তিন দফায় সময় বাড়িয়ে জরিমানা ছাড়া আয়কর রিটার্ন ১৬ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত দাখিলের সুযোগ দিয়েছিল এনবিআর। তবে ২ শতাংশ অতিরিক্ত কর দিয়ে সারাবছরই রিটার্ন জমা দেওয়া যায় বলে সংস্থার তরফে বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের
গতকাল রবিবার আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে এক প্রশ্নে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘টাইম আর বাড়বে না। এটা আজকেই শেষ করছি’।
কত রিটার্ন জমা পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমি সকালে দেখলাম এটা (অনলাইনে জমা) ১৪ লাখ ১০ হাজার। আমার ধারণা এটা ১৪ লাখ ৩০-৩৫ হাজার ক্রস করবে আজকের মধ্যে। টাইম আর বাড়বে না। এটা আজকেই শেষ করছি। আর পেপার রিটার্ন মিলে আমার ধারণা ৩৭-৩৮ লাখ হয়তো হবে। এক্সাক্ট ফিগারটা পাওয়া যাবে কাল (সোমবার)’।
‘অনলাইনে ব্যাপক সাড়া পড়ার’ দাবি করে তিনি আগামিতে এ নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা করার কথাও বলেন। সেখানে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে কী ধরনের সমস্যা হয়েছে তা শোনা হবে বলে তিনি তুলে ধরেন।
আয়কর আইন অনুযায়ী, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার রিটার্ন জমা শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। তবে এনবিআর চাইলে এরপর একক সিদ্ধান্তে আরও এক মাস সময় বাড়াতে পারে। অপরদিকে মহামারিসহ নানা সংকটকালীন সময়ে সরকার চাইলে সময় আরও বাড়াতে পারে। এবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন জমা না পড়ায় তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়। সবশেষ ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এর আগের দফায় তা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি করা হয়েছিল।
বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন’
আয়কর দিবস পরবর্তী সময়েও অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সেবা বছরব্যাপী চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের প্রধান রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটি বলেছে, ‘আয়কর দিবস পরবর্তী সময়ে রিটার্ন দাখিল করলে আয়কর আইন অনুযায়ী বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত এবং কোনোরূপ কর অব্যাহতি পাবেন না। তাছাড়া, কর দিবসে যে পরিমাণ কর অপরিশোধিত থাকবে তার ওপর আয়কর আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে (সর্বোচ্চ ২৪ মাস) অতিরিক্ত কর আরোপ করা হবে’।
বিজ্ঞপ্তিতে ‘অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত ব্যবস্থা করদাতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে’ তুলে ধরে করদাতাদের চাহিদা ও মতামতের ভিত্তিতে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া ক্রমে সহজ ও অধিকতর করদাতাবান্ধব করার দাবি করা হয়।
এনবিআর বলছে, এ কারণে এবছর ১৪ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন।