রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন

1

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন (২ হাজার ৬৩২ কোটি) ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্রায় এক বছর পর রোববার নিট রিজার্ভের হিসাবও দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যেটা এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ২৯ জুন পর্যন্ত নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালের ২ জুলাই প্রথমবারের মতো নিট রিজার্ভ প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।
নেট রিজার্ভ বলতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য অর্থ বোঝায়। অর্থাৎ, স্বল্পমেয়াদি দায় বা ঋণ বাদ দেওয়ার পর যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থাকে, সেটাই নেট রিজার্ভ।
আইএমএফের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের চুক্তির আওতায় চলতি বছর জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি মিলিয়ে ১৩৩ কোটি ডলার হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ।
আইএমএফসহ এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের পাওয়া সহায়তা রিজার্ভে যোগ হয়েছে বলে জানান এ মুখপাত্র।
আরিফ হোসেন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইএমএফ থেকে ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি) থেকে দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)থেকে দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়া গেছে, যা রিজার্ভে যোগ হয়েছে।”
২০২১ সালের অগাস্টে বাংলাদেশের গ্রস রিজার্ভ রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। কিন্তু মহামারীর সংকট এবং তারপর ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে তৈরি হয় ডলার সংকট। তাতে রিজার্ভে চাপ পড়ে এবং সরকারকে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ বাড়াতে আইএমএফের কাছে ঋণ চাইতে হয়।
সেই ঋণের শর্ত হিসেবে বেশ কিছু আর্থিক ও নীতি সংস্কারে মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে চলতি মাসের মে মাসেই ডলারের দর পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের আগের থেকেই ডলার দর বাজারভিত্তিক করার জন্য সুপারিশ করে আসছিল।
এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংক ঋণের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রিজার্ভের নিট হিসাব আইএমএফ স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী প্রকাশ, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের মতো বিষয় রয়েছে।
আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের পর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপিএম৬ ও গ্রস রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জুন পুরনো পদ্ধতির হিসাবে গ্রস রিজার্ভে ছিল ২৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের বিপিএম-৬ পদ্ধতির হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। আর্থিক সংকট সামাল দিতে ২০২২ সাল থেকে কয়েক দফা আলোচনা শেষে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ।