রায়ের কপি পেলে ইশরাকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ আটকাতে আপিল বিভাগে যে আবেদন করা হয়েছিল, তা পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেওয়ার পর প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনার।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ বৈঠকের পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে ইশরাকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিইসির কক্ষে বৈঠকের পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় অপেক্ষমান সাংবাদিকদের একজনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আপিল বিভাগের কোনো রায় এখনো (হাতে) পাইনি। রায় (কপি) পাওয়ার পরে কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসে, আইনগত বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের যা করণীয়, আমরা করবো। গণমাধ্যমের শিরোনাম দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
১ জুন বর্তমান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের পর শপথের বিষয়টি নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার, আইন মন্ত্রণালয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়াল।
সবশেষ ইশরাকের শপথ আটকাতে আপিল বিভাগে যে আবেদন করা হয়েছিল, গতকাল তা পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই জটিলতায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের আপিল বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেয়। কিন্তু তাতে ধোঁয়াশা কাটেনি, ইশরাক ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে বসার সুযোগ পাবেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি।
শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী ইয়াসিন খান বলেন, ইশরাকের বিষয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। লিখিত রায় প্রকাশিত হলে আদালতের পর্যবেক্ষণ জানা যাবে। তবে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন যে গেজেট জারি করেছিল, আদালত তাতে হস্তক্ষেপ করেনি বলেও মন্তব্য করেন এ আইনজীবী।
রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালত যেহেতু বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে, তারা মনে করছেন, ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেটের আর কার্যকারিতা নেই।
অন্যদিকে ইশরাকের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলছেন, গেজেট এখনও বহাল আছে। আমরা মনে করি, সরকার তাকে শপথ পড়াবে, এটা সরকারের দায়িত্ব ছিল তাকে শপথ পড়ানো।
অন্তর্বর্তী সরকার আদালত ‘অবমাননা’ করছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেছেন, শপথ পড়ানোর শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, অন্যথায় কাল (আজ শুক্রবার) থেকে কঠোর আন্দোলন।
টানা ১৬ দিন ধরে ইশরাক সমর্থকদের আন্দোলন চলছে। ১৪ মে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সংগঠিত হয়ে আন্দোলনে নামেন সিটি করপোরেশনের কর্মচারী, ইশরাকের সমর্থকসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। মাঝে ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পর আবার কর্মসূচি চলছে।